সারাদেশ

ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কে পুলিশ সোর্স এর ভয়ানক অপরাধের সহযোগী পুলিশ

  প্রতিনিধি ২০ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:০১:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া ‘সোর্স’ ভয়ানক অপরাধে : পুলিশই সহযোগী।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর হাইওয়ে থানা এবং শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ক্যাম্প এলাকায় ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে পুলিশের কথিত সোর্সরা। তাদের বেশিরভাগ অপরাধই ধামাচাপা দেওয়া হলেও ইদানিংকালে বেরিয়ে আসছে একের পর এক অপরাধের কাহিনী। চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। যাত্রী ও পণ্যপরিবহনের যানবাহন আটকে বিভিন্ন কায়দায় টাকা আদায় করা হচ্ছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে পুলিশের অধিকাংশ সোর্সই সাধারণত পেশাদার অপরাধী। নামে ‘পুলিশের সোর্স’ হলেও পুলিশ কর্মকর্তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নিরীহ লোকজনকে ফাসিয়ে অর্থ আদায়, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধই কথিত এই সোর্সদের মূল কাজ।

জানা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সোর্স মো. আনিছ, মো. লিটন, মো. সোহেল, মো. সুমন, মো. জসিম এরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে দির্ঘদিন ধরে হাইওয়ে পুলিশের সোর্স হিসাবে নিজেদেরকে পরিচয় দিয়ে আসছে। এরা প্রায়ই নিজ স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ সোর্সদের ওপর এতো বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে যে তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই না করেই অভিযান চালায়— যাতে অনেক নিরীহ মানুষ বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম কাঁচপুর হাইওয়ে থানা ও শিমরাইল ক্যাম্প মহাসড়ক এলাকায় ওসি রেজাউল হক ও টিআই শরফুদ্দিন, এস.আই বাবুল, এস আই নূর ইসলাম, নেতৃত্বে তাদের সোর্সরা চলাচলকারী নিরীহ মানুষকে মারধর, গাড়ী ধরে জোর পূর্বক আটকে রেখে অসহায়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া নিত্য দিনের ব্যাপার বলে অভিযোগ উঠে।

কাঁচপুর মোড়, মদনপুর চৌরাস্তা, শিমরাইল মোড়, সানারপাড় ষ্ট্যান্ড, দশতলা ষ্ট্যান্ড, মৌচাক ষ্ট্যান্ড এবং ইউটার্ন, সাইনবোর্ড মোড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এই সোর্সদের দৌরাত্ম্যে বিভিন্ন্ গাড়ির চালকসহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গেলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএনজি, আটোরিক্সা ও মিশুক চালক, ট্রাক চালক বলেন, ‘হাইওয়ে থানা পুলিশের যায়গায় যায়গায় লোক আছে। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে
১০০০/১৫০০টাকা পরিশোধ করলে হাইওয়ে থানা থেকে একমাস মেয়াদী নতুন স্টিকার (টোকেন) বা সংকেত পাওয়া যায়। টোকেনটা গাড়িতে থাকলে ধরে না।

হাইওয়ে থানার সোর্স মো. আনিছ, মো. লিটন, মো. সোহেল, মো. সুমন, মো. জসিমের মাধ্যমে এবং সরাসরি পুলিশের মাধ্যমেও মাসোহারা আদায় করে। মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ সিএনজি নতুন করে মাসোহারা করলে হাইওয়ে পুলিশকে একমাসের ১০০০/১৫০০ টাকা এডভান্স দেওয়া লাগে।

বিশ্বরোড এলাকায় গাড়ি চালালে হাইওয়ে পুলিশের সোর্সদের কাছে ১০০০/১৫০০টাকা মাসোহারা করা লাগে। মাসোহারা না করলে গাড়ি আটক করে ফেলে। যার (সোর্স) আন্ডারে (দায়িত্বে) যতগুলো গাড়ি থাকে একেক সময় একেক দারোগা আসলে তাদের কাছে টাকা পৌঁছে দেয়।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, মামলার ভয় দেখিয়ে ও কাগজপত্র দেখার নামে হাইওয়ে পুলিশ নিয়মিত মাসোহারা ও প্রতিদিন চাঁদা নিচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাইওয়ে থানায় হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি নীরবে সহ্য করে যাচ্ছে যানবাহনের মালিক, শ্রমিকরা। তারা দিন-রাত সমানতালে পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হলেও ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।

সেই সাথে শিমরাইল মোড়ের ফুটপাতের হকারদের সাথে টিআই মো. শরফুদ্দিন এবং সার্জেন্ট অমানবিক নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহার করে থাকে। মাসোয়ারা নামে শিমরাইল মোড়ে ফুটপাত উচ্ছেদ করে থাকে টিআই মো. শরফুদ্দিন এবং সার্জেন্টরা। টিআই মো. শরফুদ্দিন এবং সার্জেন্ট হকারদের কষ্টের টাকার মালামাল বিভিন্ন পরিবহনে তুলে দেয়, এবং তাদের পালিত সোর্সরা হকারদের যে মালামাল ডাম্পিং নামে নিয়া যায় সেই মালামাল তারা অন্যত্র বিক্রিয় করার অভিযোগ পাওয়া যায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার দায়িত্ব থাকা ওসি মো. রেজাউল হক এবং শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই মো. শরফুদ্দিন বলেন, যে তথ্য প্রদান করে সে-ই সোর্স। তবে নির্দিষ্ট কোনো সোর্স থানায় নেই। পুলিশের কোনো কর্মকর্তার সোর্স পালনের প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Author

আরও খবর

Sponsered content