সারাদেশ

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা

  প্রতিনিধি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ২:৩২:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

সুবিন, ক্রাইম রিপোর্টার মুন্সিগঞ্জ

ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নীরব হোসেনকে (১৭) হত্যা করেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা দিলারা বেগম। থানায় মামলা করতে এসে ছেলের কথা বলতে গিয়ে কয়েকবার জ্ঞান হারান তিনি। মা বলেন ‘পোলাডারে কত কষ্ট দিয়া জানি মারছে ওরা! পুকুরঘাটে রক্ত দেইখা বোঝা যায়, পোলাডায় বাঁচার লাইগা অনেক দৌড়াইছে। এরপরও ছাড়ে নাই। কতবার জানি মা মা করছে। ওরা যদি জানে না মাইরা, নীরবের দুইডা হাত-পা কাইট্টা দিত, এরপরও পোলাডায় বাঁইচ্যা থাকত, আমারে মা বইলা ডাকত।’ হোসেনের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ইউনিয়নের মধ্য কামারগাঁও এলাকায় মা দিলারা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকত। নীরব স্থানীয় কাজী ফজলুল হক উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। পরে লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। দিলারা বেগম বলেন, ‘বিয়ের আট বছর পর কত ওষুধ, কবিরাজ করে নীরবের জন্ম হয়। ও খুব আদরের ছিল। ১৪ বছর আগে নীরবের ছোট ভাইয়ের জন্মের পর ওদের বাবা মারা যায়। এরপর জীবনের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে পোলা দুইডারে নিয়ে বাঁইচ্যা আছি। কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা, টিউশনি করে নীরবদের পড়াশোনা করিয়েছি। নিজে কষ্ট করেছি, ছেলেদের কোনো কষ্ট করতে দিইনি।’ প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কাজী ফজলুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে কয়েক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিলেন মাগডাল গ্রামের তরুণ আরেফিনসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি দেখে নীরবসহ তিনজন প্রতিবাদ করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা–হাতাহাতি হলে স্থানীয় লোকজন মীমাংসা করে যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গতকাল বিকেলে কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বসে ছিলেন নীরবসহ দুজন। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। এতে নীরবের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি পালাতে পারলেও নীরব পালাতে পারেনি। হামলাকারীরা ছুরিকাঘাত করে পাশের একটি খালে ফেলে যায় তাকে। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Author

আরও খবর

Sponsered content