নিজস্ব প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ত্রিশালে জমি সংক্রান্ত বিরোধে বাড়ির রাস্তায় বেড়া দিয়ে ওমান প্রবাসী এক ব্যক্তির বাড়ির পাঁচ পরিবারকে জিম্মি করে রেখেছে তারই প্রতিবেশীরা। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই পরিবার গুলো।
ঘটনাটি উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী খারহর গ্রামের।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেনের বাবা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও চাচাদের মোট পাঁচটি পরিবারের লোকজনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবেশী আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্তরা জোরজবরদস্তি করে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে ও কাটা বিছিয়ে রেখে তাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগী পরিবার গুলো এবিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
ভোক্তভুগী পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হাই বলেন, ‘চলাচলের রাস্তা বন্ধ করাই আমরা পাঁচটি পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছি। বছর দুয়েক আগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সহায়তায় উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে রাস্তা খোলে দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি সে রাস্তায় আব্দুল মালেক, স্বজল, শান্ত আবারও টিনের বেড়া ও কাটা বিছিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। আমরা প্রশাসনের কাছে এর বিচার দাবি করছি।’
ওমান প্রবাসী ফরহাদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি একজন প্রবাসী। পরিবার-পরিজনের কষ্ট দূর করার জন্যই প্রবাসে আছি। যাদের কষ্ট দূর করতে আমার এই প্রবাসে থাকা দেশে তারাই ভালো নেই। প্রতিনিয়ত শুনতে হয় তাদের দুঃখদুর্দশার কথা। এসব শুনে কি ভালো লাগে? আমার পরিবারের লোকজন বেশ কিছুদিন ধরে এক প্রকার বন্দী জীবন কাটাচ্ছে। প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা তাদের চলাচলের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার মা মারা যাওয়ার পর মায়ের মরদেহটা পর্যন্ত বের করার সুযোগ দেয়নি তারা। অনেক কষ্ট করে ঝোপঝাড় পারি দিয়ে মাকে কবরস্থ করা হয়েছে। এসব শুনতে হয়েছে প্রবাসে থেকেই। আমি আমার অসহায় পরিবারকে একপ্রকার জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।’
স্থানীয় প্রতিবেশী মজিবুর রহমান বলেন, রুহুল আমিনের পৈত্রিক সম্পত্তিতে মালেকের পরিবার অবৈধভাবে বেরিকেট সৃষ্টি করে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। এটা নিয়ে অনেক দেন দরবার হলেও তারা কারও কথা শুনছে না।’
তবে এবিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে গেলে তারা প্রতিবেদক আসার খবরে অন্যত্র চলে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি মীমাংসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। তারা আমার কথা শোনে না। আমি কি এই বিষয় নিয়ে মারামারি করব?’
ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমি মাত্রই শুনলাম। মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।