সাভার প্রতিনিধি : কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কসহ আটককৃত সকল শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল করছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা । এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকগন সংহতি প্রকাশ করেছেন ।
(২৯ জুলাই) সোমবার বিকাল চারটার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন সড়ক থেকে একটি মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে ফের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যমে সমাবেশটি সম্পুর্ণ করেন তারা ।
উক্ত সমাবেশে তারা তাদের চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবি গুলো হলো – (১)জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি , (২)কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উপর নৃশংস অত্যাচারের বিচার , (৩)শিক্ষার্থীদের হত্যার পেছনে জড়িতদের অবিলম্বে বিচার করা এবং (৪) সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গণ গ্রেফতার বন্ধ করা।
আজকের সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সমন্বয়ক আহসান লাবিব বলেন, ‘আমরা একটি যৌক্তিক, ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম কোটা সংস্কার করা হোক। মেধাবীদের অধিকার নিশ্চিত করা হোক। একটি সাম্য ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক। এ আন্দোলন সরকার বা কোন দলের বিরুদ্ধে ছিলো না। কিন্তু পরে আমাদের উপর ছাত্রলীগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। যার নির্দেশে এগুলো হয়েছে সেই স্বৈরাচারী সরকারকে এর জবাব দিতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আরেক সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখেছি, কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা চালানো হয়, ফিলিস্তিনের গণহত্যা চালানো হয়েছে, বাংলাদেশেও স্বৈরাচারী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে গনহত্যা চালিয়েছে। ডিবি পুলিশ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সমন্বয়কদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধ ঘোষণা করিয়েছে, আমরা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা চাই, আগে সকল সমন্বয়কদের মুক্তি দেওয়া হোক, তারপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই স্বৈরাচারী সরকার তার লেজুড়বৃত্তিক ক্যাডার ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে প্রতিহত করতে চেয়েছে। এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। যে দেশে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের রামদা’র সামনে দাঁড়িয়ে, পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করতে পারে সে দেশে স্বৈরাচারী কোন শাসক টিকতে পারে না।’
সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, ‘দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। একজন শিক্ষক হিসেবে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার চাই। আমি চাই, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ঘুমাক, নিরাপদে থাকুক, নিরাপদে ঘরে ফিরুক । তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসুক, ক্লাসে ফিরে আসুক।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।