প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ৬:১৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৩, ২০২৪, ১:৩৪ পি.এম
মুক্তাগাছায় নিয়োগের টাকা নিয়ে উধাও প্রধান শিক্ষক, তোপের মুখে ইউএনও

নিউজ ডেস্ক : স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষার আগেই প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় নিয়োগ পরীক্ষার দিন এলাকাবাসী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্কুল ঘেরাও করে। এ ধরণের খবরে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই পালিয়ে যান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পরীক্ষা নিতে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে খোঁজে না পেয়ে বেকায়দায় পড়েন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউএনও আতিকুল ইসলাম। এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল ও স্কুল ঘেরাওয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যালয় এলাকায়। এলাকাবাসীর তোপের মুখে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতেই সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে নিয়োগ পরীক্ষার সম্পন্ন করেন ইউএনও। নিয়োগ পরীক্ষায় বাঁধার অভিযোগে ৪ জনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এমন ঘটনা ঘটেছে গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার বাঁশাটি ইউনিয়নের কান্দিগাঁওয়ের নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটরসহ ৬টি শূন্য পদে নিয়োগে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রার্থীরা যখাযথ নিয়মে আবেদনও করেন। গতকাল শনিবার ছিল নিয়োগ পরীক্ষা দিন। এর আগেই প্রাথীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কুৃমার চন্দ্র। এ খবর ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যালয় এলাকায়।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগে শনিবার সকাল থেকে এলাকাবাসী বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হন। তারা নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। বিদ্যালয়ের এ পরিস্থিতি শুনে সকালেই প্রধান শিক্ষক ময়ল কুমার চন্দ্র এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এদিন যথা সময়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মুক্তাগাছার ইউএনও আতিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে হাজির হন নিয়োগ পরীক্ষা নিতে। তিনি এসে দেখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেই ও অফিস কক্ষে তালা ঝুলছে। এ সময় এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন ইউএনও। এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও হট্রগোলে বিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ইউএনও আতিকুল ইসলাম নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এ সময় নিয়োগ পরীক্ষায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে কামরুল ইসলাম, হিমেল, ফিরোজ খলিফা ও শরীফুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন। এলাকাবাসীর তোপের মুখে প্রধান শিক্ষক পালিয়েছেন। তারা এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বহিস্কার ও নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কুমার চন্দ্রের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে হট্রগোলের বিষয়টি স্বীকার করে মুক্তাগাছার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার দিন প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কপিরাইট © দৈনিক মুক্তকথন নিউজ © মুক্তকথন গ্রুপ