নিউজ ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ গোলাম নাফিজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার দেহ বহনকারী রিকশাটি এখন থেকে একটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রাখা হবে। তার স্মরণে এই রিকশাটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে স্থাপন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে রিকশাটি গণভবনে আনা হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সেখানে রিকশাটি পরিদর্শন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম রিকশাচালক নূর মোহাম্মদকে তার সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন। গত ৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, “নাফিজের নিথর দেহ পড়ে থাকা রিকশাটি বিক্রি করে দিয়েছেন নূরু”। এই সংবাদটি প্রচারের পরপরই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম রিকশা ও রিকশাচালককে খুঁজে বের করার জন্য তার দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
এই নির্দেশনা অনুযায়ী, রিকশাচালক নূর মোহাম্মদকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রিকশাটি তিনি ৩৫ হাজার টাকায় লন্ডনপ্রবাসী আহসানুল কবীর সিদ্দিকী কায়সারের নিকট বিক্রি করেছেন। পরবর্তীতে আহসানুল কবীর সিদ্দিকী জানান, তিনি এই রিকশাটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে হস্তান্তর করার ইচ্ছা পোষণ করেন। সেই মোতাবেক রিকশাটি বৃহস্পতিবার জাদুঘরের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফার্মগেটের পথচারী-সেতুর নিচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজ। গুলিবিদ্ধ নাফিজকে পুলিশ যখন রিকশার পাদানিতে তুলে দেন, তখনো তিনি রিকশার রডটি শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন। রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। তার মৃত্যু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর শোক ও কষ্টের জন্ম দেয়, এবং সেই রিকশার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
এই রিকশাটি এখন শহীদ গোলাম নাফিজের স্মৃতি হিসেবে দেশের মানুষের কাছে থেকে যাবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি অনন্য স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করবে।