নিউজ ডেস্ক : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় শনিবার দুপুরে পিয়াল হাসান (২৭) নামে এক যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, একই দলের প্রতিপক্ষরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। দুপুর ১টার দিকে ঝিকরগাছা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত পিয়াল মোবারকপুর গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুরে খাবার খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে মিতালী হল রোডে হামলাকারীরা পিয়ালের ওপর আক্রমণ চালায়। জীবন বাঁচাতে পিয়াল দৌড়ে ঝিকরগাছা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। কিন্তু তার পিছু নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণেই তাকে ঘিরে ধরে প্রথমে বোমা হামলা চালানো হয় এবং এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করা হয়।
পিয়ালের বাবা কিতাব আলী জানান, হামলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মোবারকপুর গ্রামের শামীম রেজা, ডালিম, রিপন, সোহেল, মেহেদী ও আইয়ুবসহ আরও কয়েকজন রয়েছে। অভিযুক্ত শামীম রেজা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরিবারের দাবি, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
নিহত পিয়ালের চাচা সিরাজুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি শামীম-শাহীনের বাবা কামারুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় পিয়ালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল এবং সেই মামলায় তিনি গত বৃহস্পতিবার জেল থেকে মুক্তি পান। যদিও শনিবার সন্ধ্যায় শত্রুতা মীমাংসার জন্য বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তবে তার আগেই পিয়ালকে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরপরই উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহীন আলম বিপ্লব সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং পিয়ালের রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. পার্থ সারথী রায় জানান, হাসপাতালে আনার আগেই পিয়ালের মৃত্যু হয়েছে এবং তার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খাঁন জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এলাকার মানুষ এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোকাহত ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে মনে করেন, রাজনৈতিক কোন্দলের জেরেই এই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।