সাভার প্রতিনিধি : স্বামী আল আমিন নিহত হয়েছেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছিলেন কুলসুম বেগম। তবে পরে জানা যায়, তার স্বামী জীবিত রয়েছেন। ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা আলোচিত মামলাটি তদন্তের একপর্যায়ে কুলসুমসহ আরও দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। মামলার ঘটনায় মামলা বাণিজ্যের একটি চক্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রকিবুল হাসান জানান, শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে বাদী কুলসুম বেগমকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আটক অপর দুইজন—মানিকগঞ্জের রুহুল আমিন ও শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম তার স্বামী আল আমিনের হত্যার অভিযোগে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে কুলসুম উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় আশুলিয়ায় একটি মিছিলে আল আমিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মামলাটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়।
তবে আল আমিন নিজে থানায় গিয়ে জানান, তিনি জীবিত এবং এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কুলসুম দাবি করেন, শফিকুর রহমান ও রুহুল আমিন তাকে চাকরির প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে বাধ্য করেছে। তারা কুলসুমের জন্মনিবন্ধন নিয়ে ভুয়া নথি তৈরি করে এবং তার অজান্তে আদালতে মামলা দায়ের করে। পরে তাকে কক্সবাজারে থাকতে বাধ্য করা হয়। বিনিময়ে পাঁচ লাখ টাকা ও মাসিক ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান কুলস।
কুলসুমের বড় বোন ফাতেমা বেগমের দাবি, রুহুল আমিন সবসময় ভয় দেখাতেন এবং ভুয়া নথি বানিয়ে কুলসুমকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। মামলায় কিছু ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে। অন্যদিকে রুহুল আমিন এবং শফিকুর রহমান ভিন্ন কথা বলেছেন। তাদের দাবি, বাদীর অনুরোধে তারা সহায়তা করেছেন।
পুলিশ জানায়, ভুয়া মামলার সঙ্গে যুক্ত চক্রের তদন্ত চলছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় আরও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে আশুলিয়া থানা।