মুক্তকথন ডেস্ক : ভিকটিম সালমা আক্তার(২১)(ছদ্মনাম), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের শিক্ষার্থী। ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহে হাজির হয়ে বিবাদী ১। ইবতিয়াজ আহমদ ফুয়াদ(২২), পিতা- মোঃ বাবুল মিয়া, মাতা-হাসিনা আক্তার বাবুল, সাং- টেংগা, ডাকঘর- পনার পারুয়া-২৪৩০, থানা- কলমাকান্দা, জেলা- নেত্রকোনা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, অনুমান ০৬মাস পূর্বে বিবাদী ইবতিয়াজ আহমেদ ফুয়াদ(২২), এর সাথে তার ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। সেই সুবাদে প্রথমে তার সাথে ভিকটিমের ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে কথাবার্তা হতো। কিছুদিন পর মোবাইল নাম্বার আদান প্রদানের মাধ্যমে সরাসরি মোবাইল ফোনে কথাবার্তা চলাকালীন বিবাদীর সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক হয় এবং তাদের একে অপরের সাথে মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হতো। অনুমান ০৩ মাস আগে উক্ত বিবাদী ভিকটিমের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে রাজশাহী হতে ময়মনসিংহ আসে এবং দেখা করে। পরে উক্ত বিবাদী ভিকটিমকে জোর পূর্বক তার পরিচিত একটি হোটেলে নিয়ে যায়। হোটেলে নিয়ে ভিকটিমকে নানা ভাবে ক‚-প্রস্তাব দিতে থাকে এবং তার সাথে জোর পূর্বক আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে বিবাদী ভিকটিমের নিকট হতে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন অযুহাতে টাকা চাইতো ভিকটিম উক্ত বিবাদীর চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার কাছে থাকা ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখাতো। ভিকটিম তার এবং পরিবারের মানসম্মানের কথা চিন্তা করে বিবাদীর চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অংকে সর্বমোট ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা ও অনুমান ০১ (এক) ভরি ওজনের স্বর্নের (কানের দুল, গলার চেইন) গহনা, যার মূল্য ৯০,০০০/- (নব্বই হাজার) টাকা দেয়। বিবাদী তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে মাঝে মধ্যেই ফোন দিয়ে ক‚-প্রস্তাব দিতো, ভিকটিম তার ক‚-প্রস্তাবে রাজি না হলে তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে বলতো। ভিকটিম তার ক‚-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এবং তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় উক্ত বিবাদী রাগে ক্ষোভে ভিকটিমের নাম ও আপত্তিকর ছবি ব্যবহার করে ঝধহলরধ অভৎরহ ঝঁপযর নামক ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে। যা ভিকটিম গত ০১/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকার সময় ত্রিশাল থানাধীন ত্রিশাল নামাপাড়া ০১-নং ওয়ার্ড সাকিনস্থ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম গেট সংলগ্ন বৈতালী ক্যাফেতে থাকা কালীন দেখতে পায়। বিবাদী কর্তৃক খোলা উক্ত ফেইক ফেসবুক আইডি হতে ভিকটিমসহ তার আত্মীয়-স্বজন ও পিতাকে ম্যাসেজ করে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করে এবং ভিকটিমের নিকট ম্যাসেজ করে বলে যে, যদি বিবাদীর চাহিদা মোতাবেক টাকা না পাঠায় তাহলে উক্ত বিবাদীর কাছে থাকা ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে ভিকটিম এবং তার পরিবারের সম্মান হানি করবে মর্মে হুমকি দেয়। ভিকটিম তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় উক্ত বিবাদী রাগে ক্ষোভে অবৈধ আর্থিক সুবিধা পাওয়ার জন্য ভিকটিমকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের নাম ও ছবি ব্যবহার করে খোলা ফেইক ফেসবুক আইডিতে ভিকটিমের ছবি/ভিডিও ব্যবহার করে খারাপ আপত্তিকর পোষ্ট করে। যার ফলে ভিকটিম এবং তার পরিবারের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। ভিকটিম এলাকায় মুখ দেখাতে পারছে না এবং সামাজিক সম্মান নষ্ট হচ্ছে। বিবাদীর উক্ত কার্যকলাপে ভিকটিম ভয়ে লজ্জায় সম্মান বাচাতে তার পরিবারের লোকজনের সাথে আলোচনা করে জাতীয় জরুরী সেবা “৯৯৯” এ কল দিলে “৯৯৯” ভিকটিমকে ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের সাইবার ক্রাইম শাখায় যোগাযোগ করিয়ে দেয়। ২ এপিবিএন, সাইবার ক্রাইম সেলের কর্তব্যরত অফিসারের পরামর্শে ভিকটিম ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহে একটি অভিযোগ দায়ের করে। ভিকটিমের উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) জনাব, আলী আহমদ খান মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ২ এপিবিএন এর সাইবার ক্রাইম শাখা এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি/সিআইএ শাখার উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিবাদির বর্তমান অবস্থান সনাক্ত করে এবং ২ এপিবিএন এর এসআই(নিঃ) মোঃ আমির খসরু’র নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ইং ৩১/১২/২০২৪ তারিখ ১৩:৩৫ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানাধীন পৌরসভাস্থ ০৮ নং ওয়ার্ডের দরিরামপুর এলাকা হতে আসামী ১। ইবতিয়াজ আহমেদ ফুয়াদ (২২)‘কে ধৃত করে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করে। জব্দকৃত মোবাইল ফোন পর্যালোচনায় ধৃত আসামীর মোবাইল ফোনে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পায়। পরবর্তীতে ধৃত আসামী ১। ইবতিয়াজ আহমেদ ফুয়াদ (২২) কে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানায় সোপর্দ করা হয়। ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানার মামলা নং-২৫, তারিখ-৩১/১২/২০২৪খ্রিঃ, ধারা- পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন,২০১২ এর ৮(১/২/৩) ধারায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।