আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ চতুর্দিক থেকে শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখানে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে মানববন্ধন শেষে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, ফাহিম মুনতাসির, মুনিয়া মাহিন অতিথি, জয়ন্তী বিশ্বাস, তাসিন আরাফাত, নিশাত তাসনিম চৌধুরী, ওমর ফারুক প্রমুখ। এসময় তাসিন আরাফাত তন্ময় বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির মতো ঘৃণ্য কাজ চলছে। এতে করে দেশের শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি দেখা দিয়েছে।
কিন্তু প্রশাসনের কোনোপ্রকার পদক্ষেপ আমরা দেখছিনা।তাই প্রশাসন সহ উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি আমাদের সুস্পষ্ট বার্তা হলো, আপনারা যদি শহীদদের রক্তের উপর ক্ষমতায় বসে সুশীলতা দেখাতে চান তাহলে দয়া করে এ ক্ষমতার ছেড়ে দিন। এ ক্ষমতার চেয়ার সুশীলতার জন্য নয়। আশাকরি আজকের পর থেকে যেকোনো ধর্ষণ সহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
মাশরেকী তকী বলেন, বিগত কিছুদিন যাবত আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখান থেকে বাংলাদেশের প্রশাসনকে একটি বার্তা দিতে চাই, আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য আজ আমাদের বোনদের ইজ্জত হানি হচ্ছে। আপনারা আপনাদের প্রশাসনিক অবকাঠামো আরো শক্তিশালী করুন, আমাদের বোনেরা যেন ২৪ ঘন্টা নিরাপদে চলাচল করতে পারে। আর যদি আমাদের একটি বোনের ইজ্জতেও আঘাত আসে পরিস্থিতি আপনাদের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে। যদি কোনো বোনের ইজ্জতে কেউ আঘাত করার চেষ্টা করে শরীরের শেষ রক্ত ফোঁটা থাকা পর্যন্ত তাকে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, বিগত কিছুদিন যাবত ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে চুরি ছিনতাই বেড়ে গিয়েছে অবশ্যই এটি প্রশাসনের ব্যর্থতার প্রতিফল। আপনারা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করুন ছাত্রসমাজ আপনাদের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আহমদুল্লাহ খাঁন জুবায়ের বলেন, গত কিছু দিন যাবত আমরা লক্ষ্য করছি বাংলাদেশের মধ্যে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ ইত্যাদি হচ্ছে। এর ব্যাপারে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোন রেপিস্ট মহিলা বা শিশুকে ধর্ষণ করলে আইনের ধারা মুতাবেক যাবত জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যু দন্ড করা হয়। কিন্তু বর্তমান প্রশাসননকোন কিছু করছেনা। যদি বাংলাদেশের জনগন আইন হাতে তুলে নেয় টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া যেখানে রেপিষ্টকে পাবে মেরে বড় বড় গাছে ঝুলিয়ে দিবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেউ এমন সাহস দেখায় তাহলে তাকে হত্যা করে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হবে ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে প্রশাসন আইন দেখাতে আসলে উনাকে সহ খুঁটিতে ঝুলিয়ে রাখা হবে।
সুলতান নাঈম উদ্দিন বলেন, সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেবল অবনতির দিকে যাচ্ছে। বর্তমান প্রশাসন জনসাধারণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমরা লক্ষ্য করেছি বিগত কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলে মুহুর্তে মুহুর্তে একটার পর একটা ধর্ষণের খবর আসতেছে। আমরা সাধারণ জনতা যদি রাষ্ট্রের অধীনে নিরাপত্তা না পাই তবে রাষ্ট্রকে আমরা কর দিবো কেনো? ঢাকা শহরের পাশাপাশি আমাদের শহরেরও বিভিন্ন স্থান অনিরাপদ হয়ে উঠছে। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন টিউশন জোন গুলো যেমন কলেজপাড়া, হালদার পাড়া, টেংকের পাড় প্রভৃতি স্থান সমূহে বখাটে পোলাপানদের দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পুনিয়াউট মোড় থেকে বিরাসার রোডে যাতায়াতের সময় মানুষ ছিনতাইয়ের ভয়ে থাকে। আমরা প্রশাসনকে মাঠ পর্যায়ে জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য জোরালো অবস্থানে দেখতে চাই। আর বিশেষ করে হালদারপাড়া, মধ্যপাড়া, শান্তিবাগ, মুন্সেফপাড়ায় মাদকাসক্তদের উৎপাত যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এলাকাবাসীর মনে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে যে এখানে ছিনতাই বা ধর্ষণের মতো ঘটনা খুব বেশি দূরে নয়। সুতরাং দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব এলাকাসমূহে গুপ্ত অভিযান পরিচালনার জোড়ালো আহ্বান জানাচ্ছি। অবশেষে এতটুকুই বলতে চাই প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হলে আমরা মহল্লা মহল্লায় ফরায়েজী বাহিনীর আদলে নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তুলবো এবং নিজ মহল্লাবাসীর নিরাপত্তা নিজেরাই নিশ্চিত করবো। তখন আমাদের নজরে না প্রচলিত প্রশাসনের মূল্য থাকবে না প্রচলিত আইনের।