আরিফুল ইসলামচ,ট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মো. হৃদয় (২৫) নামে এক যুবক। নিহত যুবকের বাড়ি কক্সবাজার জেলায় এবং তার পিতার নাম মো. ইলিয়াছ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৭টার দিকে বোয়ালখালী পৌর সদরের গোমদণ্ডী রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত যুবকসহ কয়েকজন সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদে যাত্রা করছিলেন। চলন্ত ট্রেনের ওপর দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে আনন্দ প্রকাশের সময় তিনি ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান এবং ট্রেনের চাকার নিচে কাটা পড়েন। এতে তার বাম পায়ের পাতা ও আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও মারাত্মক আঘাত লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সঞ্জয় সেন জানান, আহত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পথিমধ্যে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু ঘটে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন নিশ্চিত করেছেন যে, আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক, কিন্তু অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে এভাবে যাতায়াত করে থাকেন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রেনের ছাদে যাত্রী উঠানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত এমন ঘটনা ঘটছে। রেলওয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে যাতে কেউ ট্রেনের ছাদে উঠে বিপজ্জনক যাত্রা করতে না পারে। পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যেও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন।
এই দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, সতর্কতা ও নিয়ম মেনে চললেই কেবল এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।