মোঃ তারেক রহমান, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: মাগুড়ার শিশু আছিয়ার ধর্ষণ এবং মৃত্যুর ঘটনায় দেশ এখনো উত্তাল রয়েছে। এরপরও দেশজুড়ে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে, এরই মাঝে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২টি শিশুর উপরে পাশবিকতার ঘটনা ঘটে গেল।
এবার ১৮ মাসের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আব্দুল হালিম (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ছাড়া করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সাতবাড়িয়া উত্তর গ্রামে।
গতকাল শনিবার (১৬ই মার্চ) রাত ১০টায় গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে অভিযুক্ত আব্দুল হালিম নামের ওই বৃদ্ধকে গালের জুতার বারি ও জুতার মালা পড়িয়ে সারা গ্রাম ঘুড়িয়ে গ্রাম ছাড়া করার হয়। সে ওই গ্রামের মৃত আজগর প্রামাণিকের ছেলে।
আজ রোববার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার সাতবাড়িয়া উত্তর পাড়া গ্রামে গিয়ে সম্পুর্ন ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। শিশুটির মা জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে প্রতিবেশী বৃদ্ধ আব্দুল হালিমের কাছে আমার মেয়েকে রেখে তারই বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় কাজ করছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই দেখি আব্দুল হালিম এবং আমার মেয়ে নেই।
তৎক্ষণাত তার ঘরে ঢুকে দেখি সে আমার মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা করছে। সেখান থেকে আমার শিশু কন্যাকে উদ্ধার করে বাড়িতে গিয়ে সবাইকে ঘটনা খুলে বলি। পড়ে গ্রাম প্রধানদের বিষয়টি জানানো হলে তারা বিচারের আশ্বাস দেন।
গ্রাম প্রধান ও প্রতিবেশীরা জানায় স্থানীয় মুরুব্বি শাহজাহান প্রামাণিকের সভাপতিত্বে একটি শালিস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অভিযুক্ত আব্দুল হালিম তার দোষ শিকার করে নেয়। পরে তাকে জুতার বারি ও গলায় জুতার মালা পড়িয়ে গ্রাম ছাড়া করা হয়।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত বৃদ্ধ আব্দুল হালিমের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী জানান, আমার স্বামীকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এবং ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
এবিষয়ে শালিসের সভাপতি মোঃ শাহজাহান প্রামাণিক বলেন, আব্দুল হালিম স্বেচ্ছায় তার দোষ শিকার করায় গঠিত রায় বোর্ড তার বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নেয়া সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষ মেনে নিয়েছে। পরে তাকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হয়।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, শিশুটির পরিবার অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শাহজাদপুর উপজেলার রতনকান্দি উত্তর পাড়া গ্রামে ৪ বছর বয়সী সুমাইয়া নামের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে তারই মামাতো ভাই কিশোর রিশাতকে গ্রেফতার করে আদালতের প্রেরণ করা হয়।