আব্বাস উদ্দিন:জেলা প্রতিনিধি(ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মাইক্রো ষ্ট্যান্ডের লোকজনের হামলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন প্রতিনিধি আহত হয়েছেন। এর সরাইল উপজেলার সমন্বয়ক ইফরান খানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অপর আহতরা হলেন-আলিফ মাহমুদ নাহিদ ও মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম। রোববার রাত ১০ টার দিকে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের সরাইল হাসপাতাল সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জড়িত সন্দেহে ৬ যুবককে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেপ্তার করেছেন। এই ঘটনায় সমন্বয়ক ইফরান বাদী হয়ে সরাইল থানায় হেলাল মিয়া ও বাপন মিয়াসহ ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ, মামলা, আহতরা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার রাতে সরাইল-নাসিরনগর সড়কের ধর্মতীর্থ এলাকায় মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সরাইল সদরের ফকিরপাড়ার জাকির মিয়ার ছেলে রাজিব (২৫) ও মো. শাহ আলমের ছেলে পারভেজ (২৪)। এ সময় নাসিরনগর থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস ওই দুই যুবককে চাপা দিয়ে দ্রূতগতিতে সরাইলের দিকে পালিয়ে যায়। তারা সড়কে ছিটকে পড়ে আহত হয়। মুঠোফোনে বিষয়টি স্বজনদের জানায় ও মাইক্রোর পিছনে ছুটতে থাকে। স্বজনরা ছুটে এসে মাইক্রো বাসটিকে মাইক্রো ষ্ট্যান্ডে দেখতে পায় ও আটক করে। খবর পেয়ে ছাত্র প্রতিনিধিরা মাইক্রো ষ্ট্যান্ডে পৌঁছে পুলিশকে খবর দেন। ছাত্র প্রতিনিধিরা মাইক্রো বাসটি থানায় নিয়ে যেতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। এতে ক্ষুদ্ধ মাইক্রো ষ্ট্যান্ডের লোকজন ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে প্রথমে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা হাতাহাতি ও ইটপাটকেল ছুঁড়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। হঠাৎ ঢিল পড়ে মাইক্রো বাসের একটি গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এতে ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে মাইক্রো ষ্ট্যান্ডের লোকজন চুর চুর বলে ছাত্র প্রতিনিধিদের উপর হামলায়। হামলায় তিন ছাত্র প্রতিনিধি আহত হয়েছেন। এরমধ্যে সরাইলের সমন্বয়ক ইফরান খানকে গুরূতর আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়েই রাতেই সরাইল ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ.) উবায়দুল হক। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা প্রতিনিধি বায়েজিদুর রহমান সিয়ামসহ অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধিরাও আহতদের দেখতে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে যান। মামলায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী ও মাইক্রো ষ্ট্যান্ডের সভাপতি মো. হেলাল মিয়া বলেন, আমি গত কয়েকদিন ধরে গুরূতর অসুস্থ্য ছেলেকে নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ছিলাম। গত দুই দিন ধরে সরাইল ডিজিটাল হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করছি। ২৪ ঘন্টা তার পাশে থাকা লাগে। এই ঘটনার সময় আমি ষ্ট্যান্ডে ছিলাম না। হাসপাতালে ছিলাম। কি হয়েছে জানিও না। গাড়িটিও আমাদের ষ্ট্যান্ডের না। বিশ্বরোডের পিয়াসের গাড়ি এটি। আমাকে অযথা মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমার অবস্থানের রেকর্ড ও সিসি ফুটেজও এর প্রমাণ মিলবে।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ৬ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
০১৭১৫৭৫৬২১০