শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
English
ব্রেকিং নিউজ
সৌদি আরব: হজ পালন করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে লালপুরে মাদকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গুলি বর্ষণ প্রেমের জোরে কণ্যা সন্তানসহ মামী উধাও ভাগ্নের হাত ধরে। রুশ সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবক নিহত সিরিয়া থেকে প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা পেন্টাগনের ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম্য সালিশে মীমাংসার চেষ্টা মেহেরপুরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতিতে রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা কুড়িগ্রামে ৬ দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীদর গণমিছিল সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ কেয়ারী সিন্দাবাদের অফিসে আগুন ভালুকায় মাইক্রোবাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ২

সাব-রেজিস্টার প্রদীপের ঘুষ দুর্নীতির অনুসন্ধানে মুক্তকথন নিউজ

Muktakathan News
  • Update Time : সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৩ Time View

এস. হোসেন মোল্লা – যুগ যুগ ধরে এদেশের সাব-রেজিস্টারদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।সাব রেজিস্টার পদটি পেয়ে আলাদিনের চেরাগের মত অনেকেই শূন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিক বনেছেন।রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ঘুষ-দুর্নীতি করে গড়েছেন অবৈধ অর্থে বিপুল সম্পদ।সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৮ জন সাব রেজিস্টারদের তালিকা করে মামলা দায়ের করেছেন দুর্নীতির অভিযোগে। তাদের মধ্যেই একজন সাব-রেজিস্টার প্রদীপ!

খবরে প্রকাশ, ঢাকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পল্লবী বিভাগের সাব রেজিস্টার প্রদীপ কুমার বিশ্বাস রাজস্ব ফাঁকিসহ নানান অনিয়ম ও ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন আত্মীয়-স্বজনের নামে। এমনই একটি অভিযোগ এসেছে গণমাধ্যমে। সেই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে সাব-রেজিস্টার প্রদীপ কুমার বিশ্বাসের মাতা শান্তি লতা বিশ্বাস, স্ত্রী লিপি বিশ্বাস, বড় বোন রিক্তা বিশ্বাস, মেঝো বোন গীতা বিশ্বাস, ছোট বোন নন্দী বিশ্বাস, আপন শ্যালক জয়, শ্বশুর শাশুড়ি সহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে টুংগীপাড়া উপজেলায় বিভিন্ন মৌজায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন!

আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয় করেছেন যাহার তালিকা:
১। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ঘোনাপাড়া বাসস্টান্ডে স্ত্রী লিপি বিশ্বাসের নামে কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন, ২। টুংগীপাড়া হাসপাতালের হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট রায় মন্ডল বিপ্লব ও তার বোনের কাছ থেকে ভৈরব নগর মৌজায় ২৬৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তার আপন বড় মামা ক্ষীর মোহন মন্ডল এর নামে ১৯/১১/২০২৩ তারিখে যাহার দলিল নম্বর ২৮০৩, ৩। হেলথ এসিস্ট্যান্ট রায়মন্ডলের পিতা রমণী রঞ্জন মন্ডলের কাছ থেকে চিংগড়ী মৌজায় প্রায় ১০০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন মেঝো বোন স্কুল শিক্ষিকা গীতা বিশ্বাসের নামে ৩০/০৮/২০১৬ সালে যাহার দলিল নাম্বার ১৫৩৬, ৪। চিংগুড়ি মৌজায় চিত্তরঞ্জন মন্ডলের কাছ থেকে ৯৭৮ নং দলিলে ৭/০৬/২০১৬ তারিখে ১০০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন বোন গীতা বিশ্বাসের নামে, ৫। সুব্রত মিস্ত্রির কাছ থেকে নিজ বাড়ির সামনে পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করেন বোন গীতা বিশ্বাসের নামে ও স্থায়ীভাবে একটি পাকা মন্দির নির্মাণ করে দেন। যাহার দলিল নাম্বার ১৫৯১ এবং দলিল সম্পাদিত হয়েছে ০৬/০৯/১৮ তারিখে, ৬।অমূল্য কুমার চৌধুরীর কাছ থেকে আপন মা শান্তি লতা বিশ্বাসের নামে চিংগুড়ি মৌজায় ১৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেন ১৮/০৬/২০১৯ তারিখে যাহার দলিল নম্বর ১০৯১, ৭।খিরোধ চৌধুরীর নিকট থেকে মাতা শান্তি লতা বিশ্বাসের নামে চিংগুড়ি মৌজায় ৫২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন ২৮/০১/২০২০ তারিখে যাহার দলিল নাম্বার ২৪২, ৮। স্বর্ণকার উত্তম সরকারের নিকট থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য ৩০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, ৯। সন্তোষ মন্ডল ও চিত্ত মন্ডলের কাছ থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য বিশ শতাংশ জমি ক্রয় করেন নিজ নামে।

এছাড়াও নামে-বেনামে বিভিন্ন সম্পত্তি ক্রয় করেছেন নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের নামে।
জানা গেছে, প্রদীপ কুমারের বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক প্রফুল্ল কুমার বিশ্বাস।তিনি ছিলেন খুব সৎ ও ভালো মানুষ।বাবার নামে নিজ উপজেলা সহ আশেপাশের কয়েকটি উপজেলায় প্রায় ২০টি থেকে ২৫টি মন্দির নির্মাণ পুনঃ সংস্করণসহ বিভিন্ন আশ্রম নির্মাণ করে দিয়েছেন, অবৈধ অর্থে!

প্রদীপ কুমারের পিতার নামে নির্মিত মন্দিরের তালিকা: চিংগুড়ি পশ্চিম পাড়া সার্বজনীন কালী মন্দির, চিংগরি মধ্যপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, নিজ বাড়ির সামনে কালী মন্দির ও নিজের ডুপ্লেক্স বাড়ির ভিতরে আরও একটি মন্দির তৈরি করেছেন এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের ডুমুরিয়া নিজ মামা বাড়িতে একটি আশ্রম নির্মাণ করেছেন।ডুমুরিয়া বাজারে সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বাবুপাড়া গ্রামে পাগলের মন্দির, ভৈরবনগর গ্রামে সার্বজনীন দূর্গা মন্দির,লেবুতলা গ্রামে সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, মোলারহাট থানার ভান্ডারখোলা গ্রামে সমাজপতি গোলক মন্ডলের বাড়িতে একটি মন্দির সংস্কার করে দিয়েছেন কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে। বন্ধু কৃষি অফিসার দীপকের বাড়িতে রামপাল থানায় একটি মন্দির নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও নিজ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী অনেক উপজেলায় অনেক মন্দির নাম প্রকাশ না করে নির্মাণ করে দিয়েছেন। তাছাড়াও অনেক মন্দির আশ্রমের অর্থায়ন এবং পুনঃ সংস্কার করেছেন সম্পূর্ণ অবৈধ অর্থে!

অনুসন্ধানে জানা যায়,এই প্রদীপ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ঘুষ দুর্নীতির টাকায় সেজেছেন বিশাল দানবীর। এছাড়াও একটি দামি বক্সি নোয়া গাড়ি ক্রয় করেছেন আপন ছোট ভাই স্বপন বিশ্বাসের নামে যাহার নাম্বার ঢাকা মেট্রো গ ৪২৪৯৯৮। ধারণা করা যাচ্ছে, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে আরও দুটি গাড়ি ক্রয় করা থাকতে পারে এমনকি ইতিমধ্যে প্রদীপ বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাহিরে পাচার করেছেন এবং ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার ঠাকুরনগর গ্রামে একটি বাড়ি সহ অনেক সম্পত্তি ক্রয় করে রেখেছেন। অবসর পেলেই বিমানে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছুটি কাটাতে চলে যান।

এছাড়াও বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে আরো বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী, মা, বোন, শ্যালক ও শ্বশুর-শাশুড়ির নামে নগদ অর্থ থাকার অভিযোগ রয়েছে। এই ব্যাপারে গত ২৪/১০/২৪ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৯২ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দেশের বেশ কিছু শীর্ষ পত্রিকায় তার দুর্নীতির নিউজ প্রকাশিত হয় এবং সেই প্রেক্ষিতে তাকে ঢাকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের পল্লবী বিভাগ থেকে কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলায় সাব-রেজিস্টার হিসেবে বদলিও করা হয়!

অভিযোগের বিষয়ে আরও জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, তথ্য অধিকার আইনে একটি আবেদন করলে ওই অভিযোগের বিষয়ে আমরা তথ্য দিতে পারবো যে সেটি কি চলমান আছে নাকি বাতিল হয়ে গিয়েছে। তবে, গণমাধ্যমে কোন সংবাদ প্রকাশিত হলে আমরা সেটা গুরুত্বের সাথে অনুসন্ধান করি।

অভিযুক্ত সাব-রেজিস্টার প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো ভুয়া মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি আমার বাড়ির ১৬ শতাংশ জমি ছাড়া আর কোন সম্পদ ক্রয় করিনি। আমার বাবা অনেক সম্পদ রেখে গিয়েছেন এবং ১৮ বছর চাকরি করার পর গ্রামে ভাই বোন মিলে একটি বাড়ি কি করা যায় না? এভাবেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, কিছু ব্যক্তি সামাজিকভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন তথ্য ছড়াচ্ছে।

Author

Please Share This News in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Muktakathan Kalyan Foundation ©
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102