এইচ এম এরশাদ,আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা : পৃথিবীতে কফিপ্রেমীদের জন্য একটি বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা হলো বিশ্বজুড়ে কিছু বিরল এবং ব্যয়বহুল কফি। এদের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া এতটাই বিশেষ যে, এগুলোর মূল্য সাধারণ কফির তুলনায় অনেক গুণ বেশি। এসব কফির মধ্যে সবচেয়ে দামি হিসেবে পরিচিত ব্ল্যাক আইভরি কফি, যার প্রতি কেজির মূল্য প্রায় ২,০০০ মার্কিন ডলার!
ব্ল্যাক আইভরি কফি: হাতির পেট থেকে কফি!
থাইল্যান্ডে উৎপাদিত এই বিশেষ ধরনের কফি তৈরি হয় এক অদ্ভুত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। হাতিদের খাওয়ানো হয় কফি ফল। হজম প্রক্রিয়ার শেষে, হাতির মল থেকে সংগ্রহ করা হয় কফি বিন। এরপর তা বিশেষভাবে পরিষ্কার ও প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হয় বিশ্বের অন্যতম দামি এই কফি। হাতির হজম প্রক্রিয়ার কারণে কফির স্বাদে আসে এক অনন্যতা — মসৃণ ও কম টক স্বাদের এই কফি সাধারণত বিলাসবহুল হোটেলগুলোতেই বিক্রি হয়।
কোপি লুয়াক: সিভেট বিড়াল ও কফির গল্প
বিশ্বের আরেকটি ব্যতিক্রমী এবং দামি কফি হলো কোপি লুয়াক। এটি ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি হয় এবং এর উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় এক ধরনের নিশাচর প্রাণী — এশিয়ান পাম সিভেট। প্রাণীটি পাকা কফি ফল খেয়ে ফেলে, হজমের পর এর বর্জ্য থেকে কফি বিন সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এই পদ্ধতির কারণে কফির স্বাদে একধরনের ভিন্নতা আসে, যা একে দামী করে তোলে।
কোনা কফি: হাওয়াইয়ের গর্ব
হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে উৎপাদিত কোনা কফি খুবই জনপ্রিয় ও দামী। এর চাষ হয় আগ্নেয়গিরির ঢালে, বিশেষ মাটিতে ও পরিবেশে, যা কফির স্বাদে এক অনন্যতা আনে।
জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফি
জামাইকার ব্লু মাউন্টেন এলাকায় উৎপাদিত এই কফি তার মসৃণ স্বাদ ও হালকা তিক্ততার জন্য পরিচিত। জাপানে এর বিশেষ চাহিদা থাকায় এটি আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ দামী কফি হিসেবে স্থান পেয়েছে।
লস প্লেনস কফি: একক উৎপাদনের অনন্যতা
এল সালভাদরের এই কফি তৈরি করেন একজন একক ব্যক্তি, যার খামার থেকে সীমিত পরিমাণেই এই কফি পাওয়া যায়। এই সীমিত উৎপাদন ও প্রক্রিয়ার বিশেষত্ব এটিকে বিরল ও মূল্যবান করে তোলে।
উপসংহার:
এই কফিগুলোর দাম শুধু তাদের স্বাদ বা উৎপাদন পদ্ধতির জন্যই নয়, বরং সীমিত পরিমাণ, বিশেষ পরিবেশ, এবং ব্যতিক্রমী প্রস্তুত প্রক্রিয়ার কারণেই এত বেশি। বিশ্বজুড়ে ধনী কফিপ্রেমীরা এসব কফির স্বাদ গ্রহণ করতে বিরল সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন।