মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ সাভার ও আশুলিয়া থানা নিয়ে গঠিত ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার সংসদীয় আসন ঢাকা-১৯। স্বাধীনতার পরববর্তি নির্বাচন থেকেই এখানে বিএনপির প্রাধান্য লক্ষ করা গেলেও বিগত আওয়ামী সরকারের সময় মুরাদ জং, ডা. এনাম ও সাইফুল ইসলামের রাজত্ব ছিল। এছাড়াও রাজিব-সমর ভাতৃদ্বয় সহ আওয়ামী নেতাগণ সাভার আশুলিয়ার ভিন্ন মতের অন্যান্য দলের নেতা কর্মীদেরকে কোনঠাসা করে রেখেছিল। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়াামী সরকার পতনের পরে নতুন সরকার গঠনের লক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন এমপি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতৃবিন্দ। নিন্মে সাভার আশুলিয়ার জনপ্রিয় নেতাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও কর্মব্যস্ততার চিত্র তুলে ধরা হলোঃ
ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুঃ
৫ই আগষ্ট ২০২৪ এর পট-পরিবর্তনের পর সাভারের রাজনীতিতে আলোচিত মুখ হিসাবে বিএনপি নেতা ডা. সালাউদ্দিন বাবু একক নেতা হিসাবে তার প্রধান্য বজায় রেখেছেন। বিএনপির মনোনয়নে দুইবারের এমপি হিসাবে সালাউদ্দিন বাবুর রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। উপজেলা কেন্দ্রিক প্রোগ্রামসমুহে তাকে প্রধান অতিথি করা হচ্ছে। এছাড়াও ২০২৫ এর প্রথম থেকেই বিভিন্ন স্কুল কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসমুহে অংশগ্রহণ সহ বিভিন্ন সমাজিক অনুষ্ঠানসমুহে তার সরব উপস্থিতি লক্ষনীয়। সাভারের জিরাবো নিবাসী সাবেক সাংসদ দেওয়ান ইদ্রিস সাহেবের সুযোগ্য পুত্র দেওয়ান সালাউদ্দিন ক্যাডেট কলেজে পড়াশুনা শেষ করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন অতপর সন্মানের সহিত এমবিবিএস পাশ করেন। বিসিএস পরিক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারী মেডিকেলে যোগদান করেন। অতপর ৯০এর দশকে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। সাভার আশুলিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই নেতা তার নেতাকর্মীদের মাঝে ‘বাবু ভাই’ নামে পরিচিত। যদিও তার ব্যক্তিগত আচরণ ও সাংগাঠনিক প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ে হারিয়েছেন ঢাকা জেলা সভাপতির পদ। দু একটি ইউনিয়ন ছাড়া সাভার আশুলিয়ার প্রায় সকল ইউনিয়ন সভাপতি সেক্রেটারীগণ সালাউদ্দিন বাবুর সাথে না থাকলেও চরম প্রতিযোগীতাপূর্ণ এই দলটির স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদলের অধিকাংশ নেতা কর্মীরাই বাবু ভাইয়ের জন্য মরিয়া। তারপরও বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মনের দখল নিয়ে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ডা. সালাউদ্দিন বাবু তার অনুগত নেতা-কর্মীদের মুখ উজ্জল করতে পারেন কি না” এটা দেখার জন্যেই অপেক্ষমান ঢাকা ১৯ আসনের ভোটারদের চোখ।
মাওলানা আফজাল হোসাইনঃ ঢাকা-১৯ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য পদে মনোনীত হয়েছেন মাওলানা আফজাল হোসাইন।তিনি শিমুলিয়া ইউনিয়নের নাল্লাবোল্লা গ্রামের সন্তান হিসেবে শিমুলিয়া ইউনিয়নের জনগন এই মনোনয়নকে আশুলিয়ার উত্তোন্চলের সম্মান, আবেগ ও দীর্ঘদিনের প্রার্থনার ফল হিসাবে দেখছেন।
মাওলানা আফজাল হোসাইন একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও দূরদর্শী নেতা। ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে ঢাকা জেলা উত্তর জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে দীর্ঘ ৪ বছর এবং বর্তমানে অবিভক্ত ঢাকা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারির মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তাঁর দক্ষতা, নৈতিকতা, মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও ধৈর্য্যর স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তিনি সাদামাটা পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে অভ্যস্ত ও আমানতদারিতা এবং দায়িত্বশীলতায় এক অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তিনি একাধারে একজন ছাত্রনেতা এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবেও সমাজে ব্যাপক সারা জাগিয়েছেন।
তিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে সাভার আশুলিয়ার অলিগলিতে বিচরণ করেছেন। ছাত্র হিসাবেও কৃতিত্বের সাথে মাদ্রাসা শিক্ষায় কামিল ও জেনারেল শিক্ষায় এমএ ও এম ফিল পাশ করেছেন।
বিজ্ঞাপন- মুক্তকথন কল্যাণ ফাউন্ডেশন
তিনি কেবলমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন বরং বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও আলেমেদ্বীন। বারবার কারা নির্যাতীত মজলুম জননেতা ও ন্যায় ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ও রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার অকুতোভয় দুঃসাহসী সৈনিক জনাব আফজাল হোসেন। জামাতের জন্য সবচে পজেটিভ বিষয় এখানে কোন অন্তকোন্দল নাই। জামাত মনোনিত প্রার্থী হিসাবে আফজাল হোসেনের নাম প্রকাশিত হবার পর থেকেই সকল নেতা কর্মীগণ উচ্ছাস প্রকাশ করেন একযোগে প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিদিনই সাভার আশুলিয়ার জনপদ চষে ফিরছেন জনাব আফজাল হোসেন। আর নতুন মুখ পেয়ে সর্বস্তরের জনগণ ভোট দেয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন। কথা দেয়া আর সিল মারার মধ্য কতটুকু ব্যবধান’ এটাই এখন দেখার অপেক্ষায় সাভার আশুলিয়াবাসী।
মোহাম্মদ_আইয়ুব_খান নামেই যার পরিচয়। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা বর্তমান যুবদলের ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক জনাব আইয়ুব খান। যোগ্য সংগঠক, কর্মীবান্ধব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আইয়ুব খান ঢাকা-১৯ সংসদীয় আসনের সাধারন জনগনের আস্থার আশ্রয়স্থল, সাভার-আশুলিয়ার সিংহপুরুষ জাতীয়তাবাদী দল বি.এন.পি পরিবারের এক যোদ্ধা। যিনি দলের দুর্দিনে রাজপথে ছিলেন সোচ্চার এবং অভিভাবকের আসনে অবতীর্ন হয়ে আগলে রেখেছেন নেতাকর্মীদেরকে। তিনি বিভিন্ন সময়ে নিজ উদ্দোগে সাভার আশুলিয়ার দরিদ্র পরিবারের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন।সুশিক্ষিত জনাব আইয়ুব আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ডেন্ডাবরের কৃতিসন্তান। আওমীলীগের এমপি সাইফুল ইসলামের ভোটব্যাংক খ্যাত ধামসোনার বহিরাগত ও ভাড়াটিয়া ভোট নিশ্চিত করতে পারলে বিএনপি থেকে চমক দেখাতে পারেন আইয়ুব ভাই নামে পরিচিত জনাব আইয়ুব খান।
আলহাজ্ব কফিল উদ্দিনঃ সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ কফিল উদ্দিন আমিন বাজার ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।কর্মীন্ধব হিসাবে সুনাম রয়েছে বিশিষ্ট ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক জনাব কফিল উদ্দিনের। ঢাকার গাবতলী বাসস্টান্ড নিয়ন্ত্রন, বাস শ্রমিকদের কনট্রোল এবং বিএনপির হরতাল সহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে অনন্য ভূমিকা রয়েছে কফিল সাহেবের। এছাড়াও বিএনপির বৈদেশিক রাজনীতির তারেক রহমান চ্যনেলে রয়েছে কফিল উদ্দিনের ঘনিষ্ট সখ্যতা। সে হিসাবে বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকায় অন্যতম নাম আলহাজ্ব কফিল উদ্দিন।
এছাড়াও বিএনপির এমপি প্রার্থী মনোনয়নের জন্য তদবির করছেন এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, আশুলিয়া থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব গফুর চেয়ারম্যান, তেতুলঝোড়া ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি সাবেক সভাপতি জামালউদ্দিন সরকার সহ এক ডজন নেতার নাম রয়েছে আলোচনায়।