প্রতিনিধি ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১:৩৯:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ দেশজুড়ে সাংবাদিক তৈরির নামে চলছে প্রতারণা। কিছু অসাধু চক্র নিজেকে নামকরা পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে গ্রাম ও মফস্বল অঞ্চলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
‘সাবস্ক্রিপশন কার্ড’, ‘রিপোর্টার আইডি’, ‘সদস্যপত্র’—বিভিন্ন নামের এসব কার্ডের বিনিময়ে আদায় করা হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। প্রলোভন দেখানো হচ্ছে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার। তবে কার্ড পাওয়ার পর ভুক্তভোগীরা পাচ্ছেন না কোনো সুবিধা, এমনকি কোনো পত্রিকা পর্যন্ত সরবরাহ করা হয় না।
ভুক্তভোগীরা জানান, শুরুতে প্রতারকরা খুবই আস্থাভাজনভাবে কথা বলে, পত্রিকার লোগো ও রশিদ দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করে। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। অনেকের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সম্পূর্ণভাবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এসব কার্ড বিক্রির অনুমোদন দেয়নি। বরং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের নাম ব্যবহার করে এই ধরনের প্রতারণামূলক কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে এবং এর সঙ্গে তারা সম্পূর্ণরূপে অজানা ও অসংশ্লিষ্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কার্যকলাপ শুধু সাধারণ মানুষকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, বরং সাংবাদিকতার পবিত্র পেশাকে কলঙ্কিত করছে।
অপরদিকে, দেখা গেছে যে, অনুমোদনহীন কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ডিক্লারেশনবিহীন পত্রিকাও এ চক্রের অংশ। এসব তথাকথিত সম্পাদক ও প্রকাশক বিভিন্ন অপরাধ মামলার আসামি বা চিহ্নিত চাঁদাবাজ, যারা নিজেদের স্বার্থে পত্রিকা ও কার্ড ব্যবসায় নাম লিখিয়েছে।
সরকারি নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে রাতারাতি পত্রিকা প্রকাশ, সম্পাদকের টাইটেল বাগিয়ে নেওয়া, লোকজনকে সাংবাদিক বানানোর নামে টাকা আদায়।
কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?
কেউ কার্ড দিতে চাইলে তার পরিচয় যাচাই করুন।
সংশ্লিষ্ট পত্রিকার অফিসে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হন।
কোনো টাকা দেওয়ার আগে যাচাই করুন এটি অনুমোদিত কিনা।
প্রতারণার শিকার হলে নিকটস্থ থানায় অভিযোগ জানান।
সচেতন থাকুন, প্রতারকদের ফাঁদে পা দেবেন না। নিজে সচেতন হোন, অন্যকেও সচেতন করুন। একজন প্রকৃত সাংবাদিক হওয়ার জন্য কোনো ‘কার্ড’ নয়, প্রয়োজন সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা, সাংবাদিকতা নীতিমালা ও নৈতিকতা।