প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৫ , ৪:১২:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা শহরের রঙিন রিকশা আজ শুধু যাতায়াতের বাহন নয়, বরং নগরজীবনের এক অপরিহার্য অংশ। রিকশার ঘণ্টার টুংটাং শব্দ, ক্যানভাস ভরা চিত্রকর্ম, আর চালকের টানে ছুটে চলা এই বাহন যেন ঢাকার নিজস্ব পরিচয়। কিন্তু এই রিকশা কিভাবে ঢাকায় এলো, তার ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ।
রিকশার জন্ম জাপানে। ইতিহাস বলছে, ১৮৬৯ সালে টোকিওতে প্রথম রিকশা দেখা যায়। কথিত আছে, এক ধনী ব্যক্তি অসুস্থ স্ত্রীর চলাচলের সুবিধার জন্য এ বাহন তৈরি করেছিলেন। কাঠের চাকা আর মানুষের টানে চলা এই যানটি দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। জাপান থেকে রিকশা ছড়িয়ে পড়ে চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বার্মা হয়ে ভারতবর্ষে।
ঢাকায় প্রথম রিকশা আসে ১৯৩৮ সালে। শহরে তখন কয়েকটি রিকশা চালু হয় মূলত ইউরোপীয় ও ধনী পরিবারের ব্যবহারের জন্য। সাধারণ মানুষের কাছে এটি ছিল একেবারেই বিলাসবহুল বাহন। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ঢাকায় রিকশার সংখ্যা বাড়তে থাকে। যুদ্ধোত্তর সময়ে যখন সস্তা ও সহজলভ্য পরিবহন ব্যবস্থা সংকটে পড়ে, তখন রিকশা হয়ে ওঠে নির্ভরযোগ্য বাহন।
ক্রমে রিকশা শুধু চলাচলের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর গায়ে আঁকা শিল্পকর্ম একে দিয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। রঙিন ফুল, পাখি, প্রাকৃতিক দৃশ্য কিংবা চলচ্চিত্রের পোস্টার—রিকশার ক্যানভাস যেন হয়ে উঠেছে শহুরে লোকশিল্পের প্রতীক। একইসঙ্গে এটি হাজার হাজার মানুষের জীবিকারও অবলম্বন।
আজ রিকশা ঢাকার পরিচয়ের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে যে, বিদেশিদের চোখে এটি নগরের এক অনন্য প্রতীক। ইতিহাসের পথে জাপান থেকে যাত্রা শুরু করা এই বাহন আজ ঢাকা শহরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।