মানববন্ধন / সম্মেলন

বালিয়াডাঙ্গীতে সাংবাদিক হারুনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

  প্রতিনিধি ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৫:২৬:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নইমুল ইসলাম নায়ুম, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে কালের কণ্ঠের সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সাজানো ডাকাতির ঘটনার রহস্য উন্মোচনের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, কোনো তদন্ত ছাড়াই পুলিশ তড়িঘড়ি করে সাংবাদিক হারুন অর রশিদের নামে চাঁদাবাজির মামলা নেয়। মামলার বাদী স্থানীয় আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আমিন সরকার বলেন, “সাগর-রুনি হত্যা, সাংবাদিক তুহিন হত্যা কিংবা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধের চেষ্টা— কোনো কিছুতেই সফল হয়নি। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করা যাবে না। মামলা প্রত্যাহার না হলে বালিয়াডাঙ্গীর সাংবাদিকদের সঙ্গে জেলার সব সাংবাদিক একাত্মতা প্রকাশ করবে।”

মাছরাঙা টিভির সাংবাদিক বদরুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, “অভ্যুত্থানের পর পুলিশ সংস্কারের কথা শুনলেও বাস্তবে পরিবর্তন চোখে পড়ে না। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার সাংবাদিক আল মামুন জীবন অভিযোগ করে বলেন, “অভ্যুত্থানের আগে-পরে সবচেয়ে বেশি মামলা নেওয়া হয়েছে সম্পাদক-সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশে। কোনো ঠুনকো অভিযোগ পেলেই সাংবাদিকদের নামে মামলা রুজু করছে পুলিশ। এসব বন্ধ না হলে সাংবাদিকরা পুলিশের ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকবে।”

অভিনয়শিল্পী আব্দুর রউফ বলেন, “সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের ডাকাত বলা হচ্ছে— এটা আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক। পুলিশি হয়রানি বন্ধ না হলে সাংস্কৃতিক কর্মীরাও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।”

এ সময় আরও বক্তব্য দেন— রাণীশংকৈল উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনএম নুরুল ইসলাম, গাজী টিভির সাংবাদিক এমদাদুল হক ভুট্টো, এনটিএন নিউজের জেলা প্রতিনিধি এম এ সামাদ, সিনিয়র সাংবাদিক এস এম মশিউর রহমান সরকার, চ্যানেল এস এর জেলা প্রতিনিধি জয় মহন্ত অলক, স্বাধীন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মোহাম্মদ উল্লাহ রায়হান দুলু, সাংস্কৃতিক কর্মী ফজলুর রহমান, সাংবাদিক ইলিয়াস আলীসহ অনেকে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট কালের কণ্ঠের বালিয়াডাঙ্গী প্রতিনিধি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার পরিবার চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত ছাড়াই রাতে মামলা রুজু করে। পরে গত রবিবার তিনি স্বপরিবারে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু এরপর ওই পরিবার আবার সাজানো ডাকাতির নাটক সাজিয়ে নতুন মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে।

গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে সাংবাদিকরা থানায় গিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ডাকাতির ঘটনার রহস্য উন্মোচনের আল্টিমেটাম দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শনিবার সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন।

Author

আরও খবর

Sponsered content