সারাদেশ

আরডিএ’কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে,অন্যের জায়গা দখল করে ইমারত নির্মাণ

  প্রতিনিধি ১২ অক্টোবর ২০২৫ , ১২:১৫:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

পাভেল ইসলাম মিমুল, নিজস্ব প্রতিবেদক : ইমারত বিধিমালা (বিল্ডিং কোড) লঙ্ঘনে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) দফতরে প্রায় প্রতিদিন অভিযোগ পত্র জমা পড়ছে। নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণের কারণে আশপাশের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় একটার পর একটা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। ফলে নগরীতে নকশাবহির্ভূত বহুতল ভবনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ,৫ তলার অনুমোদন নিয়ে ৭ তলা ও ৭ তলার অনুমোদন নিয়ে ১০ তলা ভবনও বানানো হচ্ছে।তবে ইমারত বিধিমালা উপেক্ষা করে সড়ক ঘেঁষে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী রাস্তা ও ফাঁকা জায়গা ছাড়ার নির্দিষ্ট বিধি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।

 

ঠিক এমন ভাবেই রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন

বৌ বাজার এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে মোসা মনোয়ারা বেগম এর বিরুদ্ধে।

 

মোসা: মনোয়ারা বেগম কেদুর মোড় বৌ বাজার এলাকার

মৃত খুদি মিয়া স্ত্রী,এলাকার মোসা: রহিমা বেগম জমির পাশে একটি বহুতল ভবন নির্মান করেছেন। তবে এই নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

 

নিয়ম বহির্ভূত বিল্ডিং নির্মান কাজ বন্ধে গত ১২ আগস্ট সুলতান আলীর স্ত্রী মোসা: রহিমা বেগম রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

 

ভূক্তভোগী মোসা: রহিমা বেগম বলেন,আমি একাধিকবার অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। তার দাম্ভিকতা হলো তিনি একজন বিত্তবান মানুষ। প্রভাবশালী মহল দিয়ে চাপ প্রয়োগ ও দেখে নেওয়ার হুমকি এবং টাকা দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করছেন। এমন কথাও তিনি প্রকাশ্যে বলছেন।

 

কিন্তু মোসা: রহিমা বেগম অপ্রতিরোধ্য। তিনি আরডিএকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তার নির্মাণ করা অব্যাহত রেখেছেন।তিনি আরও বলেন,রামচন্দ্রপুর মৌজায়,আর এস ১৮২৯ কোন অনুমোদিত নকশাঁ পাশ নেই। ১৮২৯ নং দাগের জায়গায় ইমারত নির্মানের আরডিএ কর্তৃক কোন অনুমতিও নেই।

 

জমির সীমানা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও আরডিএর বিধি না মেনে,নকশা ও নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে মোসা মনোয়ারা বেগম ৫ তলা বিশিষ্ট ইমারত নির্মাণ করছেন। এই অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না?

 

ভূক্তভোগী মোসা: রহিমা বেগম বলেন,জে এল ১৪,

রামচন্দ্রপুর মৌজায়, হোল্ডিং নং-৪১৬২খতিয়ান-৪২৮৫,

আর.এস ১৮২৯ নং দাগের ০.১৫৭ একর জায়গায় অনুমোদিত নির্মাণ কাজ করছেন মোসা মনোয়ারা বেগম। অভিযোগ থাকলেও প্রভাব খাঁটিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ সম্পন্ন করার পাঁয়তারা করছেন।

 

আরডিএ কাজ বন্ধ জানালেও কাজ চলমান রেখেছেন

মোসা মনোয়ারা বেগম।কি এমন নাটকের মধ্যে পড়ে গেছি আজ শনিবার আবারো মিস্ত্রি দিয়ে কাজ চলমান রেখেছেন মোসা মনোয়ারা বেগম। তাহলে আমি বিচার পাবো কোথায়? কার কাছে গেলে আমি ন্যায় বিচার পাবো? আমি কি একজন দিনমজুর হয়ে ন্যায় বিচার পাবো না?

 

আরডিএর বিধি না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে মোসা মনোয়ারা বেগমকে মুঠোফোন দিলে তার ছেলে বুলবুল প্রতিবেদককে বলেন,মা আর আমি শুনানির দিনে আরডিএ ভবনে গিয়ে ছিলাম। রহিমা বেগমের কেউ এসেছিলো না।বন্ধ হয়ে যাওয়া কাজ কি ভাবে করছেন। আমাকে আরডিএর অফিস থেকে কাজ করতে বলেছেন কোনো সমস্যা নাই।

 

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নে বুলবুল বলেন,আরডিএ অফিস থেকে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানানো নি।কোনো নোটিশ পাইনি আমাকে কাজ শুরু করতে বলেছেন আমি কাজ করছি।

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন,আমি আরডিএ অফিস থেকে চিঠি পেয়েছি। যার প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কাজ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরডিএ অফিস থেকে সব কিছু পুলিশের উপর চাপিয়ে দিলে হবেনা।কোন বিল্ডিং হবে,কোন বিল্ডিং হবেনা এটা আরডিএ এর দায়িত্ব। আরডিএ অফিস তাদের নিয়ম মেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘন্টা কাজ করে যাচ্ছে এবং আমরা সব সময় নিয়োজিত আছি। আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে।

 

জানতে চাইলে,আরডিএ’র ইমারত পরিদর্শক মো.ওবাইদুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, বেনজীর আহমেদকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি কাজ চলমান রাখেন তাহলে রবিবার শুনানির নোটিশ দেয়া হবে। অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে,এখনও বিষয়টি নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অথরাইজড অফিসার মো: আব্দুল্লাহ আল তারিককে

একাধিকবার মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।ফলে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।​

Author

আরও খবর

Sponsered content