সারাদেশ

জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা: বোয়ালমারীতে মামুন মিয়ার বসতভিটা ভাঙচুর

  প্রতিনিধি ১৩ অক্টোবর ২০২৫ , ৯:৫৫:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

আব্দুল মতিন মুন্সী, স্টাফ রিপোর্টার :  ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মৃত চাঁন মিয়া মাস্টারের পরিবারের সাথে ক্রয়সূত্রে জমির মালিক মো. মামুন মিয়া (৩৫)–এর মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় চণ্ডিবিলা গ্রামের মো. বাবু মিয়া (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।

বসতভিটা দখলের অভিযোগ

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গৌরীপুর গ্রামের মো. জামিল মিয়া (৫০) এর ছেলে মামুন মিয়া প্রায় দশ বছর আগে মৃত চাঁন মিয়া মাস্টারের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেন। সেখানে তিনি পাকা ঘর ও টিনশেড রান্নাঘর নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করে আসছিলেন।

গত ১০ই অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে, মৃত চাঁন মিয়া মাস্টারের ছেলে মো. মনির মিয়া (৩৭) ও তাঁর সহযোগীরা গ্রাম্য লোকজন নিয়ে মামুন মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। তারা ঘরে ঢুকে পাকা ঘর ভেঙে ফেলে, ঘরের আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ ও পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে যায়।

মামুন মিয়া অভিযোগ করেন,

“আমি বৈধভাবে জমি ক্রয় করেছি। কিন্তু চাঁন মিয়ার ছেলে ও তার লোকজন দলবল নিয়ে আমার পাকা ঘর ভেঙে দিয়েছে। আমার বন্ধু বাবু মিয়াকে মারধর করে পা ভেঙে দিয়েছে এবং তাঁর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা ও সাইকেল নিয়ে গেছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি, থানায় অভিযোগও দিতে পারছি না।”

 

আহতের বক্তব্য

আহত মো. বাবু মিয়া (৩৫) বলেন,

“আমি শুধু মামুনের বাড়িতে কী হচ্ছে দেখতে গিয়েছিলাম। মনির মিয়া ও তার কয়েকজন আমাকে ঘিরে ফেলে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। এতে আমার ডান পা ভেঙে যায়। বর্তমানে আমি চিকিৎসাধীন। আমার কাছ থেকেও এক লক্ষ টাকা ও একটি সাইকেল ছিনিয়ে নেয়।”

 

অভিযুক্তদের বক্তব্য

অন্যদিকে, বসতভিটা দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মো. মনির মিয়া (৩৭) বলেন,

“এই জমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। মামুন মিয়া অবৈধভাবে জায়গা দখল করে সেখানে মাদকের আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছিল। আমরা দীর্ঘদিন ভয়ে কিছু করতে পারিনি। পরে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে জমিটি দখলে নিয়েছি। তাঁর অভিযোগ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

 

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

স্থানীয়রা জানান, সকাল ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। কেউ কেউ ভাঙচুরে অংশ নিলেও বেশিরভাগ মানুষ ভয়ে দূর থেকে পরিস্থিতি দেখছিলেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্রশাসনের মন্তব্য

বোয়ালমারী থানার এক কর্মকর্তা জানান,

“ঘটনার বিষয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Author

আরও খবর

Sponsered content