নিজস্ব প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালিচরণপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ের কথিত বিএনপি নেতা খ্যাত মুসা (মেম্বার), একই অঞ্চলের বাসিন্দা ঝিনাইদহ জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন ও তার ভাই (ডামি নির্বাচনের) বর্তমান ইউপি সদস্য মিজু মেম্বারের দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) আনুমানিক ৪টার দিকে মুসা মেম্বার তার মুঠোফোন থেকে সাংবাদিক আরিফ হোসাইন ও তার সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই হুমকি প্রদান করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের ডাক্তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে অটো গাড়ির ব্যাটারি চার্জের রমরমা গ্যারেজ ব্যবসা করে আসছে ঝিনাইদহ জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিনের ভাই মিজু মেম্বার ও তার অন্য ভাইরা।
এলাকাবাসী আরও জানান, প্রায় ১০ বছরের অধিক সময় ধরে নাসিরুদ্দিনের দলীয় ও পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে সেই দৌরাত্ম্যে এই গ্যারেজ ব্যবসা চলমান রয়েছে। নাসিরুদ্দিনের আরেক ভাই ডাক্তার আল মামুন সহ, পুরো পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বল প্রয়োগ করে নানা অপকর্ম করে আসছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
এদিকে, ডাক্তার আল মামুনের নামে প্রতিষ্ঠিত ঝিনাইদহের আল মামুন হাসপাতালেও রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। তিনি বিগত সরকারের আমলে দলীয় ক্ষমতার দাপটে সবকিছু ধামাচাপা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানেও হাসপাতালটি চলছে সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
সংবাদের সত্যতা নিশ্চিতের জন্য সাংবাদিক আরিফ হোসাইন ও তার সহকর্মীবৃন্দ মধুপুর চৌরাস্তা সংলগ্ন উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতার অটো চার্জের গ্যারেজে গেলে বাঁধে বিপত্তি। এসময় উপস্থিত থাকা কালিচরণপুর ইউনিয়নের ডামি নির্বাচনের ইউপি সদস্য গ্যারেজ মালিকের ভাই মিজু মেম্বার নিজের বর্তমান পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা প্রদান করে। পরবর্তীতে, তারই ইন্ধনে বিএনপি পরিচয়ে মুসা মেম্বার সংবাদটি ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের উপর জোরারোপ এবং এক পর্যায়ে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করে।
স্থানীয়রা বলেন,
"মুসা মেম্বার ঝিনাইদহ জেলার নতুন হিরণ চেয়ারম্যান। সে এক আতঙ্কের নাম। এমন কোনো অপকর্ম নেই, যার সাথে সে জড়িত নেই। তার ইট ভাটায় প্রতিনিয়ত মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। এলাকার মানুষ তার ভয়ে মুখ খোলে না। সে আগে আওয়ামী লীগ করতো। হিরণ চেয়ারম্যানের বিশ্বস্ত সঙ্গী সে। এখন বিএনপির পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করছে। মানুষ আর শান্তি পেল কই!"
এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, মুসা মেম্বারের নানা অপকর্ম সম্পর্কে ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান বলেন,
"ভাই আমরা মুসার ইট ভাটা থেকে ইট নেয়ার জন্য ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা দিই। হিরণ চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় থেকে সে আমাদের ইট না দিয়ে মান-অপমান করেছে। জোর করে আমাদের কাছ থেকে ব্লাংক স্ট্যাম্প সই করে নিয়েছে। সে আওয়ামী লীগের দোসর এবং হিরণ চেয়ারম্যানের খুব কাছের লোক ছিল। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের পাওনা টাকা ফেরত দেয়া হোক।"
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুসা মেম্বার চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব সহ অসংখ্য দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার ভয়ে এলাকাবাসী সব সময় আতঙ্কে থাকে।
এদিকে, মুসা মেম্বারের দেয়া হুমকির ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিক আরিফ হোসাইন ও তার সহকর্মীবৃন্দ। এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক ইউনিট।