বাংলাদেশ

বাংলার বাঘ উপাধিপ্রাপ্ত শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক 

  প্রতিনিধি ২৭ অক্টোবর ২০২৫ , ৪:৫৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মুক্তকথন ডেস্ক : বাংলার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এক নাম শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক। বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কৃষক সমাজের মুক্তির সংগ্রামে তিনি রেখে গেছেন অমর দৃষ্টান্ত। তাঁর তেজস্বী বক্তৃতা, নির্ভীক নেতৃত্ব ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানই তাঁকে দিয়েছে “বাংলার বাঘ” উপাধি।

 

এ. কে. ফজলুল হকের পূর্ণ নাম আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বরিশাল জেলার সন্তোষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মেধা ও প্রজ্ঞায় শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অনন্য। উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় গিয়ে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল দেশ ও মানুষের সেবা।

 

ব্রিটিশ শাসনামলে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুসলমানদের শিক্ষার প্রসার ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি গঠন করেন “কৃষক প্রজা পার্টি” — যা ছিল তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় গণদল।

 

১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে কৃষক প্রজা পার্টি বিপুল বিজয় অর্জন করে, এবং তিনি বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন। তাঁর শাসনামলে কৃষকের খাজনা মওকুফ, শিক্ষার বিস্তার, গ্রামীণ উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জীবনমানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

 

রাজনীতিতে তেজ, বাগ্মিতা ও সাহসিকতার জন্য এ. কে. ফজলুল হক সমসাময়িক রাজনীতিক ও জনগণের কাছে পরিচিত ছিলেন “শেরে বাংলা” বা “বাংলার বাঘ” নামে। তিনি পরবর্তীকালে পাকিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

 

১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল এই মহান নেতা মৃত্যুবরণ করেন। আজও তিনি স্মরণীয় “জননেতা” হিসেবে — যিনি বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

Authors

আরও খবর

Sponsered content