প্রতিনিধি ২৬ নভেম্বর ২০২৫ , ৩:৩৯:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবায় চলছে চরম জনবল সংকট। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও সহায়ক কর্মী না থাকায় সেবা কার্যক্রমে সৃষ্টি হয়েছে স্থবিরতা। এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ রোগীদের ওপর, যারা প্রতিদিন অসুস্থ অবস্থায় এসে চিকিৎসার জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না।

প্রায় ৪ লাখ জনসংখ্যার এই উপজেলায় প্রধান চিকিৎসা নির্ভরতা ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কৈতক ২০ শয্যার হাসপাতাল। প্রশাসনিকভাবে কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও এখনো পুরনো ৩১ শয্যার কাঠামোতেই চলছে কার্যক্রম। সেখানে নিয়ম অনুযায়ী একজন আরএমও ও দুইজন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে কেউ নেই। বাধ্য হয়ে সাবসেন্টারে কর্মরত দুইজন চিকিৎসককে দিয়ে পুরো হাসপাতালের ভার সামলাতে হচ্ছে।
২৫ জন নার্সের স্থলে রয়েছে মাত্র ১৪ জন। ওয়ার্ডবয় ও ক্লিনার পদে নিয়োজিত থাকার কথা প্রায় ৪০ জনের, কিন্তু বাস্তবে রয়েছে অর্ধেক। ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সেবার মান মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
অন্যদিকে উপজেলার কালারুকা, সৈদেরগাঁও, শিংছাপইড় ও ধারনবাজার ইউনিয়নে থাকা ৪টি সাবসেন্টারে প্রতিটিতে ৩ জন করে জনবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ২ জন দিয়ে চালানো হচ্ছে সবকিছু। ফলে এসব কেন্দ্র কার্যত বন্ধ। বহুদিন ধরেই তালাবদ্ধ পড়ে থাকা এসব সাবসেন্টার স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী এখন মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।
উপজেলার ৩৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত রয়েছেন ৩৩ জন। কিন্তু ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব ক্লিনিকেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা।ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিমাসে ১০০–১৫০ জন নারী ডেলিভারির জন্য ভর্তি হন। প্রতিদিন আরও ৪০–৫০ জন ভিন্ন চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। বহির্বিভাগ (ওপিডি) প্রতিদিন রোগীতে ভরে থাকে। মাসিক রাজস্ব আয় ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কৈতক হাসপাতালের আয় আরও বেশি।
সব মিলিয়ে ছাতকের স্বাস্থ্য খাতে যত জনবল থাকা প্রয়োজন, বর্তমানে তার অর্ধেকও নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়ছে ডায়রিয়া, ডেঙ্গু, সর্দি-জ্বর, তাপমাত্রাজনিত সমস্যাসহ নানা জটিলতা। এতে স্বাস্থ্যসেবার ওপর চাপ বেড়েছে বহুগুণে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত আরফিন বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।
লোকবল সংকট স্বীকার করে জেলা সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, আশা করছি আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে ডাক্তার সংকটের সমাধান হবে।
















