সাভার প্রতিনিধি :সাভার জ্বালানি তেল বর্তি লড়ি উল্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দগ্ধ মো: সাকিব (১৫) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হলো।
বুধিার (৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে দিকে দগ্ধ সাকিবের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১:২০ মিনিটে সে মারা যায়। তার শরীরের ১০০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
নিহত সাকিব বরগুনা সদর উপজেলার মো: আবেদ আলীর ছেলে। তিনি ট্রাকের হেলপার (চালকের সহযোগী) ছিলেন। সে বরগুনা থেকে তরমুজ নিয়ে গাজিপুরের দিকে যাচ্ছিলো।
স্বজনরা ভাই নাইম বলেন, আমার বাবা খাগড়াছড়িতে অটোরিকশা চালান। আর আমি নিজেই পাইলিংয়ের কাজ করি। অভাবের সংসার হওয়ায় গত ৪ মাস ধরে ট্রাকের হেলপার হিসাবে কাজ নেয় সাকিব। ট্রাকের চালক হেলাল হাওলাদারের ট্রাকে বরগুনা থেকে তরমুজ লোড দিয়ে গাজিপুর যাচ্ছিলো সে। গতকাল সকালে জানতে পারি সাভারের দুর্ঘটনায় সাকিব দগ্ধ হয়ে বার্ণ ইনিস্টিউটে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ভাইয়ের সারা শরীর পুড়ে গেছে। অবশেষে গত রাতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ট্রাকের চালক হেলাল হাওলাদারেরও মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে দগ্ধ অবস্থায় ৮ জনকে বার্ণ ইউনিটে আনা হয়। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম হাসপাতালে আসার আগেই মারা যান। বাকি সাত জনের মধ্যে হেলাল ও সাকিবের শরীরের ১০০ শতাংশ পুড়ে যায়। এই দুই জনের মধ্যে হেলাল হাওলাদার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মারা যান। আর সাকিব রাত ১:২০ মিনিটে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা চিকিৎসাধীন তাদের মধ্যে মিলন মোল্লার শরীরের ৪৫ শতাংশ, শিশু মীমের শরীরের ২০ শতাংশ, আল আমিনের ১০ শতাংশ , নিরঞ্জনের ৮ শতাংশ, আব্দুস সালামের ৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুরের জোরপুল এলাকার একটি জ্বালানি তেল ভর্তি লড়ি উল্টে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় লড়ির আশেপাশে থাকা ৪ টি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকার পুড়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলেই ইকবাল নামের ট্রাক চালকের সহযোগী মারা যান। দগ্ধ ৮ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠালে নজরুল ইসলাম নামের আরও একজন মারা যান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৯ টায় হেলাল ও রাত ১:২০ মিনিটে সাকিব মারা যায়।