নড়াইলের লোহাগড়ায় মিথ্যা মামলা ও হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী মোঃ রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবার। ২০ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১১ টায় উপজেলার চর মঙ্গলহাটা গ্রামে তার নিজ বাড়ীতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন পল্লী চিকিৎসক। বিগত ২০২০ সালে আমার একমাত্র ছেলে অনিক শেখ (৩২) এর সাথে একই উপজেলার ইতনা গ্রামের চঞ্চল মোল্যার মেয়ে রানী খাতুন (২১) এর সঙ্গে মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিবাহের পর হইতে আমার ছেলের বৌ পিতার বাড়িতে থাকতে পছন্দ করে। সে আমার বা আমার স্ত্রীর সাথে কখনও ভালো ব্যবহার করে না। আমার ছেলে বেকার জীবন যাপন করে। সে কারনে দুজনের মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া বিবাদ হতো। আমার বৌ মা রানী খাতুন ৪ বছর বিবাহের মধ্যে ০৩টি সন্তান নষ্ট করেছে। আমার সংসারে সে আমাদের সাথে থাকতে চায় না। ছেলেকে নিয়ে তার পিতার বাড়িতে থাকে। আমি আমার স্ত্রী অতিকষ্টে জীবন যাপন করি।
আমার বেয়াই চঞ্চল মোল্যা তার মেয়েকে নিয়ে একাধিকবার আমায় ডেকে আমাকে সহ আমার স্ত্রী সন্তানকে চাপ প্রয়োগ করে টাকা পাওয়ার দাবি করেছে। তার মেয়েকে আমার সংসারে আর দিবে না। এ বিষয়ে ইতনা বিট অফিসার এস আই মিজান সহ মল্লিকপুর বিট অফিসার সৈয়দ আলী এস আই আকিজ সালিশ বৈঠক করেছে। সেখান থেকেও আমার বৌ মাকে তারা বাড়িতে নিয়ে যায়। তখন বৌমা ০৩মাসের অন্তস্বত্বা ছিল। এরপর থেকে তাদের সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ নেই।
আমি অতি সাধারন একজন মানুষ। আমার স্ত্রী অসুস্থ এবং স্টোক করে শয্যাশায়ী। হঠাৎ করে ১৭ জানুয়ারি গভীর রাতে লোহাগড়া থানা এস আই অমিত কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আমার বাড়িতে হানা দিয়ে আমি সহ আমার অসুস্থ স্ত্রী বীমা বেগম (৪৫) ও আমার ছেলে অনিক শেখ কে গ্রেফতার করে। অভিযানের সময় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার সাথে কোন মহিলা পুলিশ ছিল না।
এ সময় ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের সাথে মামলার বিষয় পুলিশ এস আই অমিত কুমার বিশ্বাসের সাথে বাদ-বিতণ্ডা হয়। এরপর ঐ পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় আমাদের নিকট এস আই অমিত কুমার বিশ্বাস মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন বাবদ নগদ এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এরপর আমি উদ্বদ্ধ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য আমার ছোট শালিকা হাসিনা বেগমের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা প্রদান করি। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সময়ক্ষেপন করে ১৮ জানুয়ারি দুপুরের পর আমাদের আদালতে পাঠায়। বিজ্ঞ আদালত আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে জামিন মঞ্জুর করেন। কিন্তু আমার একমাত্র সন্তান অনিকের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় সে বর্তমানে জেলা হাজতে রয়েছে।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করে বলেন, বিবাদীর দেওয়া মামলাটি ৪ জানুয়ারি থানায় নথিভুক্ত হয়। আমাদের গ্রেফতার করা হয় ১৭ ই জানুয়ারি। অথচ পুলিশ কর্মকর্তা পি/ও ভিজিট হল ১৮ জানুয়ারি। এটা কিভাবে সম্ভব? শুধু তাই নয়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অমিত বিশ্বাস ঘটনাস্থলে না গিয়েই ৫ই জানুয়ারি তিনি ঘটনা স্থল প্রদর্শন করেছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তিনি এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তার সহযোগীতা কামনা করছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাজু মুন্সী, মো:আইয়ুব মোল্লা, গোলাম হায়দার মোল্লা, ও শাহনাজ পারভীন বীমা।