নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে সম্প্রতি পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশের প্রথম সিডিএমএ প্রযুক্তি মোবাইল অপারেটর সিটিসেল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে আগ্রহী।
ইতিহাসে উত্থান ও পতন:
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিসিএল) বিটিআরসির তরঙ্গ বরাদ্দ লাভ করে, যা পরে হংকংয়ের হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড বিনিয়োগ করলে এর নাম পরিবর্তন করে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম। পরবর্তীতে বিএনপির সাবেক নেতা মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মটরস ও ফারইস্ট টেলিকম এটিকে কিনে নেয়, এবং নামকরণ করা হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, যা “সিটিসেল” নামে পরিচিতি লাভ করে।
চূড়ান্ত বন্ধ এবং প্রতিহিংসার অভিযোগ:
২০১৬ সালে আওয়ামী সরকারের অধীনে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়। ঐ বছর সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা ছিল ৪৭৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করার পরও বকেয়া ছিল ২৩৩ কোটি টাকা। পরবর্তীতে কোর্টের তদন্ত অনুযায়ী দেখা যায়, সিটিসেল ১০ মেগাহার্জ তরঙ্গ পাওয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে ৮.৮২ মেগাহার্জ, যার ফলে মোট বকেয়া কমে দাঁড়ায় ১২৮ কোটি টাকা।
পুনরায় লাইসেন্স ও আধুনিক প্রযুক্তির দাবি:
২০২৩ সালে সিটিসেলের লাইসেন্স চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হলেও, চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিটিআরসিকে এক চিঠিতে সিটিসেল আবারও লাইসেন্স ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছিল। তারা আধুনিক প্রযুক্তি নিরপেক্ষ লাইসেন্সসহ ফাইভজি অন্তর্ভুক্তি চায় এবং রাজস্ব আদায়ের পর প্রয়োজনীয় অর্থ পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অর্থনৈতিক ক্ষতি ও ক্ষতিগ্রস্তরা:
বিটিআরসিকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সিটিসেলের তরঙ্গ বন্ধ থাকায় গত ৮ বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মচারী ও অবকাঠামো ক্ষতিসহ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সংকট দেখা দেয়। এছাড়াও, প্রায় ৫ লাখ সংশ্লিষ্ট মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ:
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী জানিয়েছেন, সিটিসেলের আবেদন পর্যালোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।..