মুক্তকথন ডেস্ক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন এবং সরকারি তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে হাইকোর্ট টিআর-কাবিখা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ৩০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন।
২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি, হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ টিআর-কাবিখা প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রুল জারি করেন। একই সঙ্গে শওকত হাচানুর রহমান রিমন এবং বরগুনার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
বরগুনার পাথরঘাটা ও বেতাগী উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির অর্থ লোপাটের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত। ২০২০-২১ অর্থবছরে বরগুনা-২ আসনে ২ কোটি ২ লাখ ৯১ হাজার ৮০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে ৩২৩টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পাথরঘাটা ও বেতাগী: অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় টাকা তোলা হয়েছে।
বামনা: তুলনামূলকভাবে কম অনিয়মের অভিযোগ কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজ না করেই পুরো বরাদ্দ তুলে নেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর, পাথরঘাটার বাসিন্দা সুলতান আহম্মেদ দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেন: সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন সরকারি তহবিল আত্মসাৎ করে মানি লন্ডারিং করেছেন।
অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে স্থানীয় উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সুলতান আহম্মেদ ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর দুদকে আইনি নোটিশ পাঠান এবং এরপর ২০২৪ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
শওকত হাচানুর রহমান রিমন এ বিষয়ে দায় অস্বীকার করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন , প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার। এতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, মাদক ব্যবসা ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ
জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল পরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন।
দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী, জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুদক এই আইনের আওতায় রিমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট টিআর-কাবিখার অর্থ লোপাটের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তার কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ।
দুদক জানিয়েছে, অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।