হাসান মাহমুদ সাভার: সাভারের আশুলিয়ায় দারুল ইহসান ট্রাস্টের জমি দখল ও ম্যানেজিং ট্রাস্টি মারুফ হোসেন মুকুলের নামে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় দারুল ইহসান ট্রাস্ট পরিচালিত তাহফিজুল কোরআনুল কারীম ফাজিল মাদরাসার সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সহস্রাধিক ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র শিক্ষক ফজল উদ্দীন শিবলী বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে অনেকে আহত হয়েছে। আর সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের মুরুব্বি হেলাল স্যার ও ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার মারুফ হোসেন মুকুলসহ তিনজন মিথ্যা আসামি করা হয়েছে। যেটি আমাদের জন্য একদিকে যেমন অবিশ্বাস্য অন্যদিকে কষ্টদায়ক। আমাদের হেলাল স্যার একজন সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধ মানুষ। তিনি একা একা হাটা-চলাও করতে পারেন না। সেখানে তিনি কীভাবে গুলি করে মানুষ হত্যা করে? আর তাদের বাড়ি আশুলিয়ায় তাহলে তারা কীভাবে রাজধানীর উত্তরার ঘটনায় আসামি হয়? আমরা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই অতি দ্রুত আমাদের ট্রাস্টি মেম্বার মুকুল স্যারের নিঃশর্ত মুক্তি এবং হেলাল স্যারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নয়তো আমরা আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হব।
প্রতিষ্ঠানটির রেসিডেন্ট ডিরেক্টর ও সচিব শায়েখ হেলাল আহমেদ কবির বলেন, আমি আজ ৩৩ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে আমার বয়স ৭০ এর ওপর। আমি ঠিকমতো হাঁটা-চলাও করতে পারি না। গতকাল হঠাৎ করে আমি জানতে পারি যে রাজধানীর উত্তরা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় আমাকেসহ আমাদের ম্যানেজিং ট্রাস্টি মারুফ হোসেন মুকুল ও হারুন অর রশিদকে আসামি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে আমি নাকি গুলি করে মানুষ মেরেছি। আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি মানুষ মারার মতো জঘন্য কাজ করতে পারি? আমিতো অন্যের সহযোগিতা ছাড়া হাঁটতেও পারি না, সেখানে আমি কীভাবে মানুষ মারব? আর আমার বাসা আশুলিয়ায়, আমি কীভাবে উত্তরার ঘটনায় আসামি হই? আমি সরকারের কাছে এমন ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়েরকৃত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় একটি মামলায় (মামলা নম্বর-১৮) দারুল ইহসান ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি মারুফ হোসেন মুকুলকে ১৭৮ নাম্বার, প্রতিষ্ঠানটির রেসিডেন্ট ডিরেক্টর ও সচিব শায়েখ হেলাল আহমেদ কবিরকে ১৭৯ নাম্বার ও বোর্ড মেম্বার হারুন অর রশিদকে ১৮০ নাম্বার আসামি করা হয়। এবং সেই মামলায় গত ২২ জানুয়ারি মারুফ হোসেন মুকুলকে আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।