বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ অপরাহ্ন
English
ব্রেকিং নিউজ
জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা, ইবিতে সাংবাদিককে মারধর আশুলিয়ায় সাবেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ আমুয়ায় মৃত গরু জবাইয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ায় হামলার শিকার রাসেল, গ্রামবাসীর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ঠাকুরগাঁওয়ে অভিনয় কায়দায় ১ সপ্তাহে ৭টি অটোরিকশা একটি চক্র ছিনতাই করেছে ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাছ কাটার ঘটনায় থানায় অভিযোগ  পল্লী উন্নয়নের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে নবগঠিত সভাপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ গুরুদাসপুরে প্রতারক চক্রের কবলে সাংবাদিক পরিবার,নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদ সম্মেলন সেনাবাহিনীর অভিযানে মেহেরপুরে চাঁদাবাজ আটক-৩ মায়ের বকুনির পর অভিমান করে মহনা (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে সার্টফিকেটে নাম ভূল আসায় সংশোধন প্রসঙ্গে..

টিআর প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাটের তথ্য ফাঁস

Muktakathan News
  • Update Time : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৬ Time View

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:  কুড়িগ্রামের উলিপুরে ২০২৩/২৪ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার “কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা)” এর প্রকল্প কাগজে কলমে বাস্তবায়ন থাকলেও বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই। সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করেছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। আত্মসাৎকৃত ওই টাকা সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মতিনের পকেটে গেছে ৬০ ভাগ। ১৫ ভাগ গেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পকেটে। বাকি টাকার মালিক হয়েছেন প্রকল্প চেয়ারম্যান ও ফ্যাসিস্ট সরকারী দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সচেতন নাগরিকদের অভিমত, নিশি রাতের ওই এমপির সমস্ত প্রকল্প এভাবেই আত্মসাৎ করা হয়েছে। আর এর সহযোগী ছিলেন উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা। দুদক কর্তৃক তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তাদের।

 

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ২৭ কুড়িগ্রাম ৩ উলিপুর নির্বাচনী আসনে ২০২৩/২৪ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক সংস্কার এর জন্য ৩ পর্যায়ে ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৮৩ হাজার ৪৫২ টাকা বরাদ্দ আসে। ওই বরাদ্দের বিপরীতে প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ৩৪টি প্রকল্পে বিভাজন করা হয়। উলিপুর নির্বাচনি আসনে প্রতিশ্রুত বরাদ্দের ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৩ টাকার ৪৬টি প্রকল্প নির্ধারণ করে বন্টন হয়। আর ৩য় পর্যায়ের বরাদ্দের পরিমান ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ ১১৯ টাকা যা দিয়ে গ্রহণ করা হয় ১৮টি প্রকল্প। সব মিলিয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার প্রকল্পে সাগর চুরি হয়েছে রাস্তা সংস্কারের নামে।

সরেজমিন, তবকপুর ইউনিয়নের উমানন্দ বাজার হতে রেজাউল মহরীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৫ লাখ টাকা। ওই একই রাস্তায় শুধু নাম পাল্টিয়ে সোনারী পাড়া হতে উমানন্দ বাজার পর্যন্ত আরেকটি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫ লাখ টাকা। ২টি প্রকল্পে ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ থাকলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। শুধু রাস্তার মাটি ছিলা চেচা করা হয়েছে ইজিপিপি প্লাস কর্মসুচীর শ্রমিক দিয়ে। ওই প্রকল্পের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল বলেন, এমপির পিএস খোকন আমাকে শুধু ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন আমি আর কিছু জানিনা। গুনাইগাছ ইউনিয়নের মজিবর মাওলানার বাড়ি হতে সোনারপাড়া পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও মাটি কাটার শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়েছে বলে জানান, স্থানীয় বাসিন্দা ভুট্টু মিয়াসহ আরোও অনেকে। হাতিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কদমতলা আবুল হোসেনের বাড়ি হতে কেস্টোর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় নাম পাল্টিয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে ২টি প্রকল্প দেখিয়ে ৯ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়। প্রকল্প সংক্রান্ত কোন বিষয়ে জানেন না ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শামসুল ইসলাম। এমনকি স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য মতে, ওই রাস্তায় এক ডালি মাটিও ফেলা হয়নি। ৮ লাখ টাকার ২টি প্রকল্পের বেলায় একই অবস্থা দেখা গেছে কাশারিয়া ঘাটের মোড় হতে চড়ুয়াপাড়া নতুন ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তায়। উলিপুর নির্বাচনী আসনের ১টি পৌরসভা সহ ১২টি ইউনিয়ন বরাদ্দ পেলেও পায়নি দুর্গাপুর ইউনিয়ন।

 

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সাঈদ জানান, এমপির দেয়া শর্ত মেনে না নেয়ায় আমার ইউনিয়নের কোনো প্রকল্প দেয়নি। এমনকি আমি অন্যান্য নেতাদের মাধ্যমের নেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, মতিন স্যার একদিন আমাকে ফোনে আমার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি যুবলীগের উপজেলা পর্যায়ের এক নেতাকে দিয়ে কথা বলতে বলেন। তার কথা মতো আমি দেখা করে জানতে পারি, আমার জন্য ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হবে। কিন্তু ওই বরাদ্দের ৬০ ভাগ এমপি, ১৫ ভাগ অফিস আর ২৫ ভাগের কাজ করার দরকার নাই। আমি ওই বরাদ্দ নিতে অপারগতা প্রকাশ করি। তিনি আরও বলেন এই যে আপনি খোঁজ নিচ্ছেন, ওই বরাদ্দ নিলে আজ আমাকে ১০ লাখ টাকার হিসেব দেয়া লাগতো।

 

গত বছর ৫ আগস্টের পর পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পেয়ে হোয়াটস এ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও সিন করেন নি। তার পিএস খোকন ফোন রিসিভ না করলেও হোয়াটস এ্যাপ মেসেজ দেখেও কোন রিপ্লাই করেন নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা বলেন, আমি সবেমাত্র এসেছি বিষয়টির কিছুই বলতে পারছি না। একই কথা বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফিজানুর রহমান।

Author

Please Share This News in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Muktakathan Kalyan Foundation ©
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102