শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন
English
ব্রেকিং নিউজ
রোজা হল ধনী গরিবের পার্থক্য নির্ণয়ের মাপকাঠি বন্ধুত্বের আলোয় ইফতারের মিলনমেলা, পাঁচ বছর পর একসঙ্গে দ্বিতীয় বারের মত কর্ণফুলী টানেল টোল ডিপার্টমেন্ট কতৃক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে শিবিরের মতবিনিময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইফতার”হুইল” চেয়ার” ও আর্থিক সহায়তা প্রদান পঞ্চগড় শিশু কন্যা ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পেলাইদ উত্তরপাড়া আকন্দবাড়ী জামে মসজিদের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল।  এবার শাহজাদপুরে ৪ বছরের শিশু ধর্ষণ করলো মামাতো ভাই, মুমূর্ষু অবস্থায় হাঁসপাতালে ভর্তি বাগেরহাট সদরের সিএন্ডবি বাজারে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধন ময়মনসিংহের গৌরীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি বিশেষ অভিযানে ৮ কেজি গাঁজা সহ নারী আটক

লাগামহীন দূর্নীতি অটোরিকশা চালক এখন কোটিপতি

Muktakathan News
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৩ Time View

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের গোসাইনপুর গ্রামের আহমদ আলীর (লেংড়া আহমদ) ছেলে মাসুক আহমদ। সাত ভাইয়ের মধ্যে সে সবার বড়। একসময় পরিবারের অবস্থা এতো খারাপ ছিল যে মাসুকের মা কচু লতা তুলে ছেলেদের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করে পরিবার চলত। মাসুক আহমদ কিছু বড় হওয়ার পর বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে যে অল্প স্বল্প রোজগার করত তা দিয়ে চলত তাদের পরিবার। সে দৈনিক ২০ টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন হাস রাখাল হিসাবে কাজ করে। এভাবে চলে ২০০৮ সাল পর্যন্ত।

 

কিছু বড় হয় অন্যান্য ভাইয়েরাও। তখন ছোট ভাই সুজুক আহমদ ও সে নিজে অটোরিকশা (সিএনজি) চালক হিসেবে পরিচয় ক্রিয়েট করেন। ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা থেকে দুই ভাই মিলে যা আয় করতেন তা দিয়ে মোটামুটি চলত তাদের পরিবার। ২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের সময় মাসুক আহমদ নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসাবে পরিচয় দেয়া শুরু করেন। নেতাদের পিছে পিছে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায় তাকে যত্রতত্র। নিজ দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তাকে হাইব্রিড নেতা উপাধি প্রদান করেন। কারণ সে একসময় ছিল বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তেমন নেতাদের পিছনে ঘুরে তেমন কিছু ভাগিয়ে নিতে পারনি সে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোট বদ্ধ হয়ে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে শুরু হয় বিরোধী মতে দমন-পীড়ন। তখন স্থানীয় বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়েরে তার ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে।

 

এইসব মামলা বাজিতে সে এতো আগ্রহী হয় যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ প্রশাসনের সকলের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। এই সুবাদে ২০১৮ সালের নির্বাচন পরবর্তী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব বর্ষের উপহারের ঘরের টেন্ডার আসে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে টেন্ডার দিলে নিজেরও অনেক ফায়দা হবে এমন চিন্তায় তাকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ঘরগুলোর টেন্ডার প্রদান করেন। এই যেন তার ভাগ্যাকাশে নতুন চাঁদ উদিত হলো। ৮০০ টি ঘর নির্মাণ করতে করতে মাসুক আহমদ হয়ে উঠে প্রায় ১৫কোটি টাকার মালিক। এই সব ঘরকে এত নিম্নমানে তৈরি করা হয়েছে যে মাত্র দুই তিন বছরের ভিতরে বেশিরভাগ ঘর ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে।

মাসুক আহমদের গ্রামে খুজ নিয়ে জানা যায়, যার একটি ঘর নির্মাণ করার মত জায়গা ছিল না, সে মাত্র ৩/৪ বছরের ব্যবধানে এখন অনেক বড় জমিদার। ভবিষ্যতে সরকারি কোন সংস্থা যাতে তাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করতে না পারে সে জন্য কৌশলে এসব জমি সে তার বাবা ও অন্যান্য ভাইদের নামে রেজিস্ট্রি করেছে। এবং অল্প স্বল্প নিজের নামেও রেজিষ্ট্রি করেছে। ৪ বছর আগে যার মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, সে এখন স্থানীয় বিন্নাকান্দি বাজারে দুতলা বিল্ডিংয়ের মালিক। সেই বিল্ডিংয়ের নিচেও রয়েছে খাস জায়গা যা ছড়ার পানির উপর নির্মিত। তাছাড়া বিশাল বাগান বাড়ি ও কোটি টাকার খামার দেখলে যে কেউ ভাববে হাজার বছরের জমানো যেন এই সব সম্পদ। অথচ এগুলো যে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের লুণ্ঠিত সম্পদ তা কি কেউ কল্পনা করবে?

এলাকাবাসীর বর্ণনামতে, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে প্রায় সপ্তাহখানেক মাসুক আহমদকে রাস্তাঘাটে বের হতে দেখা যায়নি। এমনকি তার বাড়ির মেইনগেট ছিল তালাবদ্ধ। বাজারের পূর্ণ বিল্ডিং ছিল বন্ধ। এর কিছুদিন পর সে প্রকাশ্যে বের হতে দেখা গেলেও তার খামারের গরু সহ অন্যান্য প্রাণীগুলো গাড়ি দিয়ে স্থানান্তর করতে দেখা গেছে। অনেক সম্পদ বাড়ি থেকে গাড়ি দিয়ে বাহিরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। অনেকে ধারণা করছেন যে, মাসুক আহমদ হয়ত বাহিরে কোথাও পলায়ন করবে। কিন্তু সব কিছুকে মিথ্যা প্রমাণ করে বর্তমানে সে গোয়াইনঘাট উপজেলার কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে আবারও আগের মতো দাপটের সাথে সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

টেন্ডার বাজি ছাড়াও মাসুক আহমদ এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সম্পদ আত্মসাৎ করেছে মর্মে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন। এলাকায় তার নির্যাতনের শিকার অনেকে মনে করেন অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তা কারণে এখনও তার মত একজন স্বৈরাচারের সহযোগীর যাতনা সহ্য করতে হচ্ছে এবং তার মত একজন অন্যায় অত্যাচার ও লুন্ঠনকারীরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাচ্ছে না।

Author

Please Share This News in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Muktakathan Kalyan Foundation ©
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102