বাবুল রানা বিশেষ প্রতিনিধি মধুপুর টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ ভাবে আসক্ত হচ্ছে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া খেলার নেশায়।মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দলে দলে সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন মাঠেঘাটে, ব্রিজের ওপর, রাস্তার দুপাশে বসে এমনকি পাড়া-মহল্লার চা-পানের দোকানে হুমড়ি খেয়ে বসে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্য সূর্য সন্তানেরা অনলাইনে জুয়া খেলছে।
এদের অনেকেই স্কুলে না গিয়ে বন্ধুদের সাথে অনলাইন জুয়া খেলায় দিন পাড় করছে।এ খেলায় তরুণদের পাশাপাশি যুবক, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন পেশার শ্রমিক সহ প্রবীনেরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর পাড়া-মহল্লা ও গ্রামাঞ্চলের দোকানপাট এবং ব্রিজের ওপর সারি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় এসব গেইমারদের।এ খেলায় অংশ নিতে একজন গ্রাহক প্রথমে সর্বনিম্ন ১থেকে ১০/২০ হাজার টাকা বা তার উর্ধেও রেজিষ্ট্রেশন করে তার একাউন্টে জমা রেখে এ জুয়া শুরু করেন। বেশি টাকায় বেশি লাভ এমন আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপনে আসক্ত হয়ে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন এ জুয়া খেলার ফাঁদে।
এ অনলাইন জুয়ায় গেইম কোম্পানি গুলো গ্রাহকের বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য প্রথমে কয়েক দফায় খেলায় বিজয়ী করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে থাকেন।
পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সেই টাকা গ্রাহককের কাছ থেকে কখন যে ৩/৪ গুন তুলে নিয়ে যায় তা গ্রাহক খেলার নেশায় বুঝতেও পারেননা। আবারও সেই টাকা পাবার আশায় ধারদেনা করে টাকা জমা দিয়ে শুরু করছেন জুয়া খেলা কিন্তু বিধিবাম, কোম্পানি আর কোনো এভাবেই তাকে টাকা দিচ্ছেন না। এর ফলে পাওনাদারের সাথে জড়িয়ে পড়ছে বিবাদে এবং সেই বিবাদ মিটাতেই তিনি বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন।
এমন হতাশার কাহিনি অনেকের মুখেই বলতে শোনা গেলো।
হঠাৎ কোটি টাকার স্বপ্ন দেখা আলোকিত সমাজের সকল পেশার মানুষগুলো আজ এ নেশায় আসক্ত হয়ে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজারও যুবকের ভবিষ্যৎ এবং তাকে নিয়ে পরিবারের আকাংকিত স্বপ্ন।
এ অনলাইন জুয়ার নেশায় পড়ে অনেকেই আজ পড়াশোনায় মনোনিবেশ হারাচ্ছে, ফলে ভবিষ্যতে এ-র প্রভাব শিক্ষা ক্ষেত্রেও পড়বে বলে আশংকা করছেন বিশিষ্টজনেরা। একদিকে এ জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে যেমন বিভিন্ন পরিবার আজ সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে ঠিক তেমনি অপরাধ প্রবনতা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
এসব পরিবারকে সর্বশান্ত করে একটি চক্রের মাধ্যমে দেশের অর্থ পাচার করা হচ্ছে বিদেশে। এ বিষয়ে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও গ্রামাঞ্চলে নজরদারি বৃদ্ধি করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দগন।
বাবুল রানা
মধুপুর টাঙ্গাইল