মামলার এজাহার ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে হৃদয় হোসেন (২৫) নামে এক ব্যক্তি তাকে নিয়মিত উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি হৃদয়ের বড় দুই ভাই জসিম উদ্দিন (৩৩) ও সুজন মিয়াকে (৩০) জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
১৩ মার্চ রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে গেলে হৃদয় হোসেন চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে মেয়েটিকে অচেতন করে অপহরণ করে। পরে তাকে একটি অজ্ঞাত কক্ষে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। এ সময় তার গলায় ছুরি ধরে ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, ১৯ মার্চ হৃদয়ের বড় ভাই জসিম ফোন করে মেয়েটির ভাইকে বোনকে নিয়ে যেতে বলে। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
হাসপাতালের চিকিৎসক রুমা আক্তার বলেন, “নির্যাতনের কারণে মানসিক আঘাত পেয়ে মেয়েটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
এ ঘটনায় প্রথমে স্থানীয় থানা পুলিশ মামলা নিতে কালক্ষেপণ করলেও পরে আদালতের নির্দেশে শিবালয় থানা মামলাটি রেকর্ড করে। ইতোমধ্যে মূল অভিযুক্ত হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, “আমার মেয়েকে যে নির্যাতন করেছে, তাদের ফাঁসি চাই। আমার মেয়ে নির্যাতন সইতে না পেরে এখন পাগল হয়ে গেছে।”
শিবালয় থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, “মঙ্গলবার সকালে হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বুধবার ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।