আল আমিন, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবিতে অবস্থিত গ্যালাক্সি ড্রাগন বাগান শুধু একটি কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে নারী শ্রমিকদের জন্য নতুন এক আশার আলো। এখানকার সবুজে ঘেরা বিশাল ড্রাগন ফলের বাগানে প্রতিদিন কাজ করছেন শতাধিক নারী শ্রমিক, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপজাতি নারীও রয়েছেন।
এই বাগানে নারীদের অংশগ্রহণ শুধুমাত্র শ্রমিক হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়—তাঁদের কাজের মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে নিজ নিজ পরিবারের জীবনমান। সংসারের ব্যয়ভার বহনের পাশাপাশি অনেকেই সন্তানদের শিক্ষার খরচ, চিকিৎসা, এমনকি সঞ্চয়ের ব্যবস্থাও করছেন নিজের আয়ে। আগে যারা নির্ভরশীল ছিলেন পরিবারের পুরুষ সদস্যদের উপর, আজ তারা নিজেরাই স্বাবলম্বী, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান।
বিশেষ করে উপজাতি নারীদের জন্য এই কর্মসংস্থান আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকেই জানাচ্ছেন, সমাজে নানা বাধা পেরিয়ে তারা যখন গ্যালাক্সি ড্রাগন বাগানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন, তখন থেকেই তাদের জীবনে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
একজন নারী শ্রমিকের ভাষায়:
“আগে আমাদের জীবনে দারিদ্র্যই ছিল নিয়তি। কিন্তু এই বাগানে কাজ করার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছি। এখন ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারছি, নিজেদের খাবার, জামাকাপড়ের চাহিদা মেটাতে পারছি।”
এই বাগানে পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারীরা সমানতালে কাজ করছেন—ড্রাগন ফলের চারা রোপণ, পরিচর্যা, ফল সংগ্রহ এবং প্যাকেটজাতকরণ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে। উদ্যোক্তাদের ভাষ্যমতে, নারীদের আন্তরিকতা, পরিশ্রম ও যত্নশীলতা এই চাষকে আরও সাফল্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সূর্যোদয়ের আলোয় নারী শ্রমিকরা মাঠে আসছেন।
তাঁরা হাতে হাতে ড্রাগন ফল তুলছেন, ঝুড়িতে ভরছেন।
একজন উপজাতি নারী নিজের বাড়িতে সন্তানদের সঙ্গে বসে আছেন—পাশেই বইপত্র ও স্কুলব্যাগ।
উদ্যোক্তা বা বাগান ব্যবস্থাপকের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার, যেখানে নারী শ্রমিকদের প্রশংসা করা হচ্ছে
গ্যালাক্সি ড্রাগন বাগান এখন শুধু ড্রাগন ফল উৎপাদনের কেন্দ্র নয়, এটি হয়ে উঠেছে নারী শ্রমিকদের স্বাবলম্বিতা ও উন্নয়নের প্রতীক। পাঁচবিবির মাটিতে এই পরিবর্তনের ছোঁয়া ছড়িয়ে পড়ুক দেশের আনাচে-কানাচে—এটাই সবার প্রত্যাশা।