রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
English
ব্রেকিং নিউজ
পাঁচবিবি ধুরইল আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট স্কুলে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে আকচা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ কোনো প্রতিশ্রুতিই আর বিশ্বাস করে না সাভারে ‘চোর সন্দেহে’ যুবককে গাছে বেঁধে ৩ ঘণ্টা নির্যাতন, শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও লুঙ্গিতে আগুন সীতাকুণ্ডে ৪৫০শিক্ষার্থীদের মাঝে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় সম্পন্ন পাঁচবিবিতে চানপাড়ায় ভুয়া এনজিওর নামে কোটি টাকার প্রতারণা, আটক আসাদুজ্জামান মানিক বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির শহীদ জিয়া প্রজন্ম দলের (BJSZPD)কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন ঘোষণা উপদেষ্টাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের দায়ে কুড়িগ্রামে সহকারী শিক্ষক বরখাস্ত ময়মনসিংহ সিপিএসসি, র‍্যাব-১৪, কর্তৃক ২০ কেজি মাদকদ্রব্য গাঁজা সহ ০১ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ফ্রিতে সিম নিয়ে কানাডিয়ান ভিসা প্রত‍ারণার আসামী নীলফামারীর শারমিন প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে বীরগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন

ঠাকুরগাঁওয়ে আকচা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ কোনো প্রতিশ্রুতিই আর বিশ্বাস করে না

Muktakathan News
  • Update Time : রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
  • ৭ Time View

মোঃ মজিবর রহমান শেখ,ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৩নং– আকচা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ একটি ব্রিজের জন্য চলাচলের চরম বিপদে পড়তে হয় ।

স্থানীয়দের নিজস্ব অর্থায়নে টাঙ্গন নদীর উপর নির্মিত নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়ার সময় এভাবেই সাংবাদিকদেরকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার মানুষজন। তবে জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতিগুলো টাঙ্গনের জলে ভেসে গেলেও আকচা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ এখনো স্বপ্ন দেখছেন পালপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গনের তীরে একদিন একটি ব্রিজ নির্মাণ হবে। জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে দফায় দফায় পাওয়া প্রতিশ্রুতিতে আশার স্বপ্ন বুনেছে এ অঞ্চলের কৃষক, শ্রমিক ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু রাতের স্বপ্ন যেমন ভোর হলেই মিথ্যা হয়, ঠিক তেমনই মিথ্যা হয়ে গেছে ১০ গ্রামের মানুষের একটি ব্রিজের স্বপ্ন। তবে ব্রিজটি নির্মিত হলে পাল্টে যাবে ঝাকুয়াপাড়া, সেনপাড়া, পালপাড়া, বাগপুর, সিংপাড়া, সর্দারপাড়া, চরঙ্গী, দক্ষিণ ও উত্তর বঠিনা গ্রামের কৃষক ও সাধারণ মানুষের জীবনমান। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ হেঁটে চলাচল করছে। তবে পণ্যবাহী কোনো যানবাহন যাতায়াত করতে পারছে না। বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল-মোটরসাইকেল পার হলেও তিন চাকার গাড়ি চলে না।

 

বর্ষা মৌসুমে নৌকাযোগে নদী পার হতে হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। এতে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা আর রোগীদের নিয়ে স্বজনদের পড়তে হয় বিপাকে। এছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা নারী, রোগী ও কৃষিপণ্য আনা নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। স্থানীয়দের দাবি, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর দেখা পাওয়া যায় না। বছরের পর বছর শুধু আশ্বাস দিয়ে গেলেও ব্রিজ নির্মাণে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেননি কেউ। তাই সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সচিন, দিলিপ, রিয়াজুল, আশরাফ, আরিফ সহ আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আকচা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ পালপাড়া ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। নদীর দুই পাড়েই রয়েছে পাকা সড়ক। কিন্তু নদীতে ব্রিজ না থাকায় কৃষিপণ্য, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, নির্মাণ সামগ্রী পরিবহণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।
তারা আরও বলেন, এটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানে প্রচুর পরিমাণ সবজির আবাদ হয়। কিন্তু এসব কৃষিপণ্য শহরে সরবরাহ করা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। অপরদিকে নদীর পশ্চিমে-পূর্বে রয়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা প্রতিদিনই এই নদী পার হয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। ব্রিজের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও নানা দুর্ভোগে পড়তে হয়। গর্ভবতীসহ মুমূর্ষু রোগীকে সময় মতো হাসপাতালে নিতে না পারায় অনেকে মারা যাচ্ছে। এমন নানান দুর্ভোগ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই অবহেলিত এলাকাটির দিকে।

১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব ও সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং কৃষি প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আমলগীর ও আওয়ামী লীগের সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির এসেছেন, ব্রিজ নির্মাণে কথাও দিয়েছেন। কিন্তু সেই কথা তারা রাখেননি। বৃদ্ধা কিরণ বালা ও বাচ্চাই রানী সাংবাদিকদেরকে বলেন, যুদ্ধের পর থেকেই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছি। কত দুর্ঘটনা ঘটে চোখের সামনে। ছোট-খাট হলেও সরকার একটা ব্রিজ নির্মাণ করে দিলে আমাদের কষ্ট কমে যেত। সহজেই হাট-বাজারে তরি-তরকারি নিয়ে বিক্রি করা যেত। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদেরও সুবিধা হতো।


আক্ষেপের সুরে কয়েকজন কৃষক বলেন, জন্মের পর থেকে দেখছি মাপামাপি চলছে। কিন্তু আজও তা অফিস পর্যন্ত যাই নাই। যতই ছবি তুলে ব্রিজ আর হয় না। আমাদের মতো গরিব কৃষকদের ডাক সরকারের কানে যায় না। শহিদুল নামে এক বাসিন্দা সাংবাদিকদেরকে বলেন, ১০-১২ গ্রামের মানুষের আসা যাওয়ার একমাত্র পথ এই সাঁকো। আমরা বহু কষ্টে আছি।

নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছে ধরনা দেয় ব্রিজ করে দেবে বলে। তবে ২৫-৩০ বছরে নির্বাচনের পর কাউকে দেখিনি অন্তত একটি বাঁশ দিয়ে আমাদের সহায়তা । এ ব্যাপারে আকচা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শিমলা রানী সাংবাদিকদেরকে বলেন, আমরা বারবার প্রতিশ্রুত শুনে এসেছি। ব্রিজটি নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও শুনেছি। কিন্তু সেটা বাস্তবে পরিণত হয়নি। আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অবিলম্বে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস সাংবাদিকদেরকে জানান, সাঁকোটি পরিদর্শন করেছি। এর ওপর দিয়ে বহু মানুষের চলাচল। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েকটি ব্রিজের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। একনেকে পাশ হলেই পালপাড়া ব্রিজের কাজ শুরু করতে পারবো।

Author

Please Share This News in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© Muktakathan Kalyan Foundation ©
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102